জাতীয় বিজ্ঞান দিবস

2695
0

১৯৩০ এর কলকাতা পেয়েছিল এক নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীকে।যাঁর আবিষ্কারকে স্মরণ করে রাখতে ঘোষণা হয়েছিল জাতীয় বিজ্ঞান দিবস। সেই বিজ্ঞানী চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন। সিভি রামন নামেই বেশি পরিচিত। কলকাতা অবশ্য তার আগে আরেক নোবেলজয়ীকে পেয়ে গিয়েছিল তিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ নাথ ঠাকুর। চেন্নাইয়ে বড় হওয়া সিভি রমন ছোটবেলা থেকেই ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। বাবা ছিলেন একজন প্রথিতযশা বিজ্ঞানের শিক্ষক। সেই শিক্ষকের সন্তান চন্দ্রশখর চেন্নাই প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে পদার্থবিদ্যায় স্বর্ণ পদক পেয়ে সম্মানের সঙ্গে পাশ করেন। মাস্টার অফ সায়েন্স করার পর সেখান থেকে কলকাতায় চলে এসেছিলেন বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুদিন শিক্ষকতা করার পর পদত্যাগ করে যোগ দেন কলকাতাতেই ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্সে। সেখানেই ১৯০৭ থেকে ১৯৩৩ পর্যন্ত দীর্ঘদিন তাঁর সাধনার ক্ষেত্র হয়ে ওঠে। এবং এই সাধন ক্ষেত্রেই তিনি ঘটিয়ে ফেলেন এক অভাবনীয় বিস্ময়কর প্রতিভার বিচ্ছুরণ। যা বিশ্বের দরবারে আলোর বিকিরণ বা `রামন এফেক্ট’ নামে পরিচিতি লাভ করে। আর সেই গবেষণার সূত্রেই রামন এফেক্ট ১৯৩০ সাল পদার্থে নোবেল পুরস্কারের সম্মান এনে দেয় এই বিজ্ঞানীকে। শুধু নোবেল পুরস্কারই নয়, নানা সময়ে নানা সম্মানে সম্মানিত হন এই বিজ্ঞানী দেশ বিদেশের বিজ্ঞান মহলে। রয়াল সোসাইটির ফেলো, নাইট ব্যাচেলর উপাধি। ভারত সরকার এই বিজ্ঞানীকে ১৯৫৪ সালে ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত করে। ১৯৫৭ সালে পান `লেনিন শান্তি পুরস্কার’। এহেন বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানীর জন্য ১৯৮৬ সালে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ভারত সরকারের কাছে ২৮ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে জাতীয় বিজ্ঞান দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দেবার আবেদন করে। সরকার সেই আবেদন অনুমোদন করে। তার পর ১৯৮৭ সাল থেকেই এই বিজ্ঞানীর স্মরণে প্রতি বছর পালিত হয়ে আসছে ন্যাশনাল সায়েন্স ডে। এই জাতীয় বিজ্ঞান দিবসে স্কুল কলেজ থেকে মহাবিদ্যালয়ে নানা ধরনের বিজ্ঞানের প্রদর্শনী থেকে নানা অনুষ্ঠান পালিত হয়। আর বেশ কয়েক দশক ধরে এই দিবসটি চিহ্নিত হয়ে আসছে নানান ভাবনার বিষয় বস্তুতে। গত বছরের ভাবনা ছিল `সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ফর এ সাসটেনেবল ফিউচার।’ এ বছর এই দিবসের স্লোগান `সায়েন্স ফর দ্য পিপল অ্যান্ড পিপস ফর দ্য সায়েন্স।’ যেন ইংরেজি সেই বাক্যটিরই প্রতিধ্বনি, `সায়েন্স উইদাউট রিলিজিয়ন ইজ লেম, রিলিজিয়ন উইদাউট সায়েন্স ইজ ব্লাইন্ড’।