দূরশিক্ষায় অনুমোদন বাতিল রাজ্যের চার বিশ্ববিদ্যালয়ের

2459
1

বাতিল করা হল রাজ্যের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষায় পঠন-পাঠনের অনুমোদন। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে আমাদের রাজ্যের চারটি বিশ্বাবিদ্যালয়— রবীন্দ্রাভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় দূরশিক্ষায় কোনো পঠন-পাঠন করতে পারবে না বলে জানিয়ে দিল ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্টস কমিশন।

প্রসঙ্গত, বাতিল হবার এই সম্ভাবনার কথা আমরা এর আগেও এপ্রিল মাসে প্রকাশ করেছি, বলেছি রাজ্যের পক্ষ থেকে কেন্দ্রের কাছে চিঠি লেখা হয়েছে সেকথাও (https://jibikadishari.co.in/?p=4386 এবং https://jibikadishari.co.in/?p=4437)। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটু পরিষ্কার বলে জানিয়ে রাখা প্রয়োজন, প্রতি রাজ্যেই বর্তমানে যে দূরশিক্ষার বিশ্ববিদ্যালয়গুলি রয়েছে বা যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে দূরশিক্ষায় পঠন-পাঠন হয়, এই বছর থেকে সেই সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির দূরশিক্ষায় পঠন-পাঠনের জন্য গ্রেড বেঁধে দেয় ন্যাক (ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল)। বর্তমানে চালু হওয়া নিয়ম অনুযায়ী দূরশিক্ষায় পঠন-পাঠনের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ৪ পয়েন্ট অ্যাক্রেডিটেশন স্কেলের মধ্যে ৩.২৬ পয়েন্ট পেতে হবে। সেই অনুযায়ী রাজ্যে এই পয়েন্ট পেয়েছে দুটি বিশ্বাবিদ্যালয়: নেতাজি সুভাষ ওপেন ইউনিভার্সিটি ও বর্ধমান ইউনিভার্সিটি। বাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের নম্বর হল, রবীন্দ্রাভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ৩.১০, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ৩.১২, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২.৮৬। এর জন্য যে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে দূরশিক্ষার পাঠন-পাঠন বন্ধ করতে হবে তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিল ইউজিসি। তার প্রেক্ষিতে যাতে অনুমোদন এ বছরটাও দেওয়া হয়, তার জন্য রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর গত এপ্রিল মাসে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠায়। গতকাল ৯ আগস্ট, ইউজিসি আগামী শিক্ষাবর্ষের সমস্ত রাজ্যের অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির নাম প্রকাশ করে। পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে শুধুমাত্র বর্ধমান ও নেতাজী সুভাষ ওপেন ইউনিভার্সিটির নাম রয়েছে। বাকিগুলির নাম নেই। ৯ আগস্ট ২০১৮ তারিখে প্রকাশিত অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়/প্রতিষ্ঠানগুলির তালিকা (F.No. 1-6/2018 (DEB-I)) দেখা যাবে ইউজিসির এই লিঙ্কে: https://www.ugc.ac.in/pdfnews/9969719_UGC-RECOGNITION-FOR-ODL-PROGRAMMES-2018-19-ONWARDS.pdf

তবে ইউজিসি থেকেও জানানো হয়েছে, যে-বিশ্ববিদ্যালয়গুলি অনুমোদন পায়নি, তাদের ৩০ দিনের মধ্যে ফের আবেদন করতে হবে। যতদূর জানা গেছে, আগামী ১৩ আগস্ট  কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি প্রতিনিধি দল নতুন করে  আবেদন করার জন্য দিল্লি যাচ্ছে। রবীন্দ্রাভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সমস্যাটি হল দূরশিক্ষার সুব্যবস্থার জন্য তাদের কিছু কর্মী নিযুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিছু কর্মী নিযুক্ত হলেও কিছু বাকি আছে, যেটা আগামী এক মাসের মধ্যে করে ফেলার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। প্রসঙ্গত এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এ বছর দূরশিক্ষায় ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি এখনও বন্ধ রেখেছে।

এখানে আরেকটা জিনিস বলে রাখা প্রয়োজন, নেতাজী সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু স্টেট ওপেন ইউনিভারিসিটি, সে কারণে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাক র‍্যাংকিংয়ের প্রয়োজন নেই। ঠিক সেরকমভাবে ইগনু অর্থাৎ ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল ওপেন ইউনিভার্সিটি যেহেতু সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি তাই সেক্ষত্রেও এই ইউনিভার্সিটি দেশের যে-কোনো রাজ্যে দূরশিক্ষায় পঠন-পাঠন চালাতে পারে।

আশা করা যায় সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলি লক্ষ-লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীর পড়াশোনায় ব্যাঘাত যাতে না হয় সেজন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে।