আজ ৩১ অক্টোবর, ভুতুড়ে দিন

1814
0
halloween day

হঠাৎ রাস্তায় হাজার-হাজার কঙ্কাল চলে বেড়াতে দেখলে কার না ভয় লাগবে। হ্যাঁ নকল ভূতের পোশাকেই হাজার-হাজার মানুষ পথে নামেন এই দিনটিতে। যাকে বলে ভূত তাড়ানো বা ভূত-ভূত খেলা। আর এই সংস্কারের ভূতই হাজার-হাজার বছর ধরে চেপে রয়েছে ইউরোপের কয়েকটি অঞ্চলে যা হ্যালউইন উৎসব নামে পরিচিত। শুধু সাধারণ মানুষই নয়, অনেক শিক্ষিত মানুষও এই হেলোউইন নামক সংস্কারের উৎসবে শামিল হয়ে পডেন। আর সেই দিনটি অর্থাত্‌ ৩১ অক্টোবর দিনটি হেলোউইন দিবস রূপে চিহ্নিত। যাকে বলে ভুতুড়ে উৎসব। ইউরোপ-আমেরিকা তো বটেই বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এই দিনটি বিরাট উৎসব রূপে পালিত হয়ে থাকে। ওই সব দেশের একটা বড় অংশ বাডি ঘর রাস্তাঘাট প্রভৃতি অঞ্চলে আলো নিভিয়ে প্রায়ান্ধকার পরিবেশে লাউ, কুমড়ো প্রভৃতি ফসল কেটে তার মধ্যে মোমবাতি বা কৃত্রিম আলো জ্বেলে ঘুরে বেড়ান। কালো গাউন পরে পথে নেমে পড়ে ভূতের মতো সেজে। এর উৎপত্তি নাকি ২২০০ বছর আগের। যেখানে মানুষরা কুমড়ো বা লাউয়ের খোলাকে মাথার খুলি করে ভুতুড়ে পোশাক ও নানা ধরনের ভয়ের মুখোশ পরে নকল কঙ্কাল সেজে পথে ঘাটে ভিড় করে উৎসব পালন করে। অনেকেই হইহুল্লোড় করে দিনটা কাটান। বাচ্চারা ভূতের পোশাক পরে বাড়ি-বাড়ি ঘুরে লজেন্স-টফি আদায় করে ফেরে। আজকের দিনটি তাদের কাছে এক মজার ব্যাপার।

একদিকে ভূত তাড়ানো খেলা অন্যদিকে কুসংস্কার উৎসবে শামিল হওয়া। এই উৎসব হেলো ইভ নামেও পরিচিত। কেউ কেউ বলেন এর শুরু নাকি প্রাচীন একটি উৎসব ‘সাহ উইন’ থেকে। কেল্টিক অঞ্চল বা বর্তমান আয়ার্ল্যান্ড, ব্রিটেন এবং ফ্রান্সে। সে সময় তাঁরা অক্টোবরের শেষ দিনটিকে বিদায় জানিয়ে নভেম্বরের প্রথম দিনটিকে নববর্ষ রূপে উদ্‌যাপন করতেন। নববর্ষের আগের দিনটিকে সাহ উইন বা ‘গ্রীষ্মের শেষ’ দিন রূপে পালন করতেন। তাঁদের কাছে এই দিনটি গ্রীষ্মের ফসল তোলার শেষ দিন হিসেবেও পালিত হত। ১ নভেম্বর দিনটি শুরু হত অন্ধাকারাচ্ছান্ন শীতের শুরুর দিন হিসেবে। সেই অর্থে প্রাচীন কেল্টিক মানুষরা এই ৩১ অক্টোবর দিনটিকে ভুতুড়ে দিন হিসেবে পালন করতেন। অনেকটা আমাদের দোলের আগের দিন চাঁচড় উৎসবের মতো। গোটা কেল্টিক অঞ্চল জুড়েই এই উৎসব পলিত হত। তাঁরা ভাবতেন, পথে নেমে ভূতের মতো সেজে চিৎকার-হইহুল্লোড় করলে ভূত বা অশীরী আত্মা আর কাছে আসতে পারবে না। যাকে বলে ভূত তাড়ানো। এটা একেবারেই সংস্কার। এই কেল্টিক উৎসবই সারা ইউরোপে এক সময় ছড়িয়ে পড়ে। দিনে-কালে  তা হেলোউইন নামেই বেশি পরিচিত হয়েছে।