ওয়ার্ল্ড রিফিউজি ডে

schedule
2022-06-20 | 10:47h
update
2022-06-20 | 11:47h
person
জীবিকা দিশারী
domain
জীবিকা দিশারী

এই তো মাত্র কদিন আগে এক গুলিবিদ্ধ সন্তানকে মা কোলে নিয়ে ফিরছেন একটু নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে। মাথার ওপর খোলা আকাশ, শয়ে-শয়ে মানুষ পাড়ি জমিয়েছেন মায়ানমার থেকে। আবার দেখা গেছে দীর্ঘদিন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের প্রাঙ্গণ থেকে লাখে-লাখে মানুষ সিরিয়ার ভূমি ছেড়ে নিরুদ্দেশ জীবনের সন্ধানে। নানা দেশে নানা ভাবে নানা কারণে লক্ষ-লক্ষ মানুষকে ঠিকানাহীন জীবন কাটাতে বাধ্য হতে হয়। বইয়ের ভাষায় এঁরা রিফিউজি বা উদ্বাস্তু। আমরা বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে এক ভয়াবহ উদ্বাস্তু জীবনের ছবিও দেখেছি।
এই উদ্বাস্তু জীবনের সংখ্যা শুনলে আঁতকে উঠতে হয়। এই মুহূর্তে ৫০ কোটিরও বেশি মানুষ রিফিউজি বা উদ্বাস্তু অভিধায় বেঁচে রয়েছেন বা বেঁচে থাকতে বাধ্য হন। প্রতিদিন প্রতি ২৪ মিনিটে একজন করে মানুষ পৃথিবীর কোথাও না কোথাও ঘরবাড়ি ছেড়ে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে বাস্তুহারা হয়ে পড়েন। দিন-দিন সারা বিশ্বে যুদ্ধ, দারিদ্র্য, জাতি-ধর্মের বিদ্বেষের কারণে লক্ষ-লক্ষ মানুষ গৃহহারা, রাষ্ট্রহারা হয়ে পড়েন। শুধু দারিদ্র, ধর্মীয় কারণেই নয়, বর্তমান বিশ্বে পরিবেশ পরিবর্তন অর্থাৎ খরা, বন্যা, ভূমিকম্পের  মতো কারণেও স্থানচ্যুত হতে বাধ্য হন। সেই তালিকায় বর্তমানে একটা বড় অংশের মানুষ সমকামী বা লিঙ্গান্তরকামী হয়ে সমাজ সংসার থেকে বিচ্যুত হয়ে জীবনযাপন করেন স্বাভাবিক সমাজগ্রাহ্য কোনো পরিচয়ের অভাবে।
Advertisement

গত বছরে‌ই ১ কোটি ৩৯ লক্ষ মানুষ নতুন শরণার্থীর তালিকায় লিপিবদ্ধ হয়েছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের তথ্য অনুযায়ী সারা বিশ্বে উদ্বাস্ত সংখ্যা ৬ কোটি ৫৩ লক্ষ। গড়ে প্রতি দিন ৪২,৫০০ মানুষ এক দেশ থেকে আরেক দেশের সীমারেখা বা বর্ডার পেরিয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি জীবনকে বাজি রেখে নিরাপত্তাহীন জীবনযাপনে বাধ্য হন। বিশ্বের একটা বড় অংশের মানুষের কোনো দেশ নেই। তাঁরা রিফিউজি, উদ্বাস্তু।
বিশ্বের সবথেকে উদ্বাস্তু সৃষ্টিকারী দেশ হিসেবে চিহ্নিত সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান। সিরিয়ায় দেশের ৪৫ শতাংশ মানুষ  বাস্তুচ্যুত শুধুমাত্র যুদ্ধের কারণে। সেই সারিতে পূর্বোক্ত দেশগুলিও। সারাবিশ্বের বাস্তুচ্যুত মানুষদের জন্য গড়ে উঠেছে বড় বড় ক্যাম্প। বিশ্বের সবচেয়ে বড় রিফিউজি ক্যাম্প রয়েছে কেনিয়ার দাদাব নামক স্থানে। সেখানে নাকি ৩,২৯,০০০-এরও বেশি মানুষ উদ্বাস্তু পরিচয়ে বেঁচে আছেন।  বিশ্বের ২০ কোটি রিফিউজির ৫১ শতাংশ মানুষ ১৮ বছরের কম।  এইসব পরিসংখ্যান থেকে পরিষ্কার হয়ে ওঠে বিশ্বের রিফিউ মানুষের বতর্মান চেহারাটা। দিন দিন যা বেড়েই চলছে।
সারা বিশ্বের এই রিফিউজি জীবন ও তাদের সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতার পক্ষেই প্রথম ১৯৫১ সালে গড়ে উঠেছিল রিফিউজি সচেতনতার দিন, আগে যা ছিল শুধু মাত্র আফ্রিকা রিফিউজি ডে হিসেবে পরিচিত। ২০০০ সালে ইউনাইটেড নেশনস বা ইউএনএইচসিআর বর্তমান বিশ্বের এসংক্রান্ত সমূহ সমস্যাকে সর্বসমক্ষে সচেতনতার বার্তা দিয়ে প্রতি বছর ২০ জুন ইন্টারন্যাশনাল রিফিউজি ডে হিসেবে চিহ্নিত করে। সর্বক্ষেত্রে সভা আলোচনার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। করোনার কারণে এই দিনটিও এবার পালিত হল অনলাইনে।
                                                                                                                                        ভাস্কর ভট্টাচার্য
Advertisement

Imprint
Responsible for the content:
jibikadishari.co.in
Privacy & Terms of Use:
jibikadishari.co.in
Mobile website via:
WordPress AMP Plugin
Last AMPHTML update:
24.04.2024 - 12:20:55
Privacy-Data & cookie usage: