স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই ভারতীয় শিক্ষার মূল নীতি নির্ধারণের সঙ্গে সঙ্গে নানান শিক্ষা কমিশন যেমন গঠিত হয়েছে, তেমনই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকার এসে সেই শিক্ষাকে যুগোপযোগী করতেও সময়ে সময়ে নানান প্রয়াস চালিয়েছে। তারই পদক্ষেপ হিসেবে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার দেশের লক্ষ-লক্ষ স্কুল পড়ুয়ার ব্যাগের বোঝা কমাতে নতুন এক সিলেবাস প্রণয়ন করতে উদ্যোগী হয়েছে। যেখানে বিভিন্ন বিষয়ের পড়ার ভার কাটছাঁট করে পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলো ও নীতি শিক্ষাকে বেশি জোর দিতে আগ্রহী। নতুন সিলেবাস প্রণয়ন করতে সারাদেশ থেকে প্রায় ৩৭ হাজার শিক্ষকের মতামত নেওয়া হয়েছে। সেইসব শিক্ষাবিদদের পরামর্শ বিবেচিত ও নানা পরামর্শ গৃহীত হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী নতুন সিলেবাস গড়ার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে আগামী ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকেই নতুন হালকা সিলেবাসে পাঠ গ্রহণ করবে শিশুরা। প্রতিটি স্কুলে খেলাধুলার পরিকাঠামো গড়ে তুলতে দেশের ১১ লক্ষ ৭০ হাজার স্কুলকে ৫ থেকে ২০ হাজার করে টাকা অনুদান দেওয়ারও প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। সেইসঙ্গে প্রতিটি স্কু্লে থাকতে হবে খেলার মাঠ। সম্প্রতি কলকাতায় এসে এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর-এর মন্তব্য, শুধুই পড়ার বোঝা নয়, সেই বোঝা হালকা করে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হবে প্রকৃত মানুষ গড়ে তোলা। শুধুই মুখস্থ করে পরীক্ষার খাতায় উগড়ে দেওয়া নয়। প্রথমে এই নতুন পাঠ্যসূচি চালু হবে সিবিএসই মাধ্যম স্কুলগুলিতে। এই নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়নের উদ্যোগের পাশাপাশিই ২০০৯ সালে শিক্ষার অধিকার আইন মোতাবেক অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত যে পাশ-ফেল প্রথা উঠে গিয়েছিল, তাকে রদ করে পাশ–ফেল প্রথাকেও ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মানবসম্পদমন্ত্রী। দেশের ২৫টি রাজ্য ইতিমধ্যে সেই মতে সায় দিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে পড়ুয়া পিছু বইয়ের খরচ বাবদ বরাদ্দও বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। ছাত্র পিছু ১৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হচ্ছে ২৫০ টাকা। উচ্চ-প্রাথমিকে ২৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, রাজ্য সরকার ছাত্রদের জন্য যে বই প্রস্তুত করে তার একটা বড় অংশ আসে কেন্দ্রীয় সরকারের কোষাগার থেকে। ছাত্রছাত্রীদের পোশাক খাতেও টাকার বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।