কল সেন্টারে প্রচুর কাজ : পেশার দিশা

schedule
2017-12-19 | 12:35h
update
2017-12-20 | 06:56h
person
জীবিকা দিশারী
domain
জীবিকা দিশারী

কোন ধরনের প্রোডাক্ট, সার্ভিসিং প্রবলেম ম্যানুফ্যাকচারিং জনিত সমস্যা, টেকনিক্যাল জিজ্ঞাস্য, রিসারভেশন, সিকিউরিটি সংক্রান্ত সহায়তা, যে কোন কিছুর জন্যেই মানুষকে ঘরে বসেই হাতে তুলে নেন ফোন, ভার্বাল কমিউনিকেশনের মাধ্যমে সঠিক নির্দেশিকা দেওয়া হয় কাস্টোমার বা উপভোক্তাদের। গত কয়েক দশকে মৌখিক এবং অনেক ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল সহায়তার জন্য এক বিশাল  কেয়ার সার্ভিস মতো কাজের জগত তৈরি হয়েছে। তৈরি হয়েছে এক বিশাল কর্মসংস্থান।

কল সেন্টার বা বিপিও জব কী?

যে কোন ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট কোম্পানির নিজস্ব প্রোফাইল, প্রোডাক্ট বা পরিষেবা সংক্রান্ত তথ্য, নতুন স্কিম সংক্রান্ত তথ্য উপভোক্তার কাছে পৌঁছে দিতে বা পরিষেবা সংক্রান্ত কোন সমস্যা হলে, টেকনিক্যাল সমস্যা- বিজনেস ডিলিং সমস্ত কিছুর ক্ষেত্রেই কোম্পানি এবং তার উপভোক্তা উভয়ের জন্যেই কল সেন্টার এক্সিকিউটিভরা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভমিকা পালন করে। টেলিকম ফেসিলিটি, এক বিশাল ডেটা বেস এবং ইন্টারনেট সিস্টেমকে কাজে লাগিয়ে পরিষেবা দিয়ে থাকেন কল সেন্টার পার্সোনালিটিরা। কোম্পানির  ডেস্ক হিসাবে কাজ করতে হয় এই কাস্টোমার কেয়ার সেন্টারকে। অনেক নামী- তথ্য- সংস্থা নিজস্ব কাস্টোমার কেয়ার সার্ভিস ইউনিট তৈরি করে রেখেছে অন্য কোম্পানিগুলিকে সহায়তা করার জন্য।  স্বাভাবিকভাবেই, কাজের জায়গায় তৈরি হয়েছে অনেক।

যোগ্যতা কেমন লাগে?

১) মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক যোগ্যতাতেই এই পেশায় আসা যায়। তবে এই পেশার সবথেকে প্রয়োজনীয় বিষয়বস্তু হল কমিউনিকেশ স্কিল। অনেক সময় শিক্ষাগত যোগ্যতা কম থাকলেও উন্নতমানের কমিউনিকেশন স্কিল থাকলে পেশায় উন্নতি করা সম্ভব।

Advertisement

২) দুটি বা তিনটি ভাষায় পরিষ্কার, স্পষ্ট উচ্চারণ, সুন্দর বাচনভঙ্গিতে কথা বলার দক্ষতা তৈরি করতে হবে। নিজের কথা বা নির্দেশ কাস্টোমারের বোধগম্য করা উচিত, ঠিক তেমনিই কাস্টোমারের বক্তব্য শুনে, বুঝে চটজলদি উত্তরপ্রদানের স্কিল তৈরি করতে হবে।

৩) অল্প সময়ের মধ্যে একাধিকবার বিভিন্ন ধরনের কাস্টোমারদের সুবিধা- নিয়ে কাজ করার জন্য নিজের মানসিক স্থিতাবস্থার দিকেও নজর দিতে হবে। মাথা ঠান্ডা রেখে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করার মানিসকতা, দিনে- যে কোন সময়ে কাজের জন্য অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। বেইসিক কম্পিউটার নলেজ, টাইপিং স্পিড, থাকারও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

কী রকম কোর্স রয়েছে?

এই পেশার জগতে আসার জন্য সবথেকে উপযোগী নিজের মাতভাষা ছাড়াও অন্য ভাষা সমন্ধে স্কিল তৈরি করা। কল সেন্টার বা বিপিওগুলিতে রিজিয়নাল ভাষার বাইরেও আন্তর্জাতিক ভাষা হিসাবে ইংরেজিকে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।  সেক্ষেত্রে ইংরেজিতে ভালো কথা বলার দক্ষতা তৈরির জন্য স্পোকেন ইংলিশ- ট্রেনিং নেওয়া যেতে পারে। স্পোকেন ইংলিশ- সার্টিফিকেট বা ডিপ্লোমা কোর্স রয়েছে। এখনাকর দিনে আলাদা করে কল সেন্টার বা বিপিও জবের জন্য বিভিন্ন ধরণের বেসরকারি ট্রেনিং সেন্টার তৈরি হয়েছে। পেশার জগতে এই ধরণের কোর্সও যথেষ্ট উপযোগী।

কোথায় পড়া যেতে পারে?

স্পোকেন ইংলিশ নিয়ে পড়াশুনা করার জন্য কলকাতায় সরকারি, বেসরকারি একাধিক প্রতিষ্ঠান আছে। রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার, ব্রিটিশ কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া বা যাদবপুর ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসেও স্পোকেন ইংলিশের ব্যাপারে কোর্স করানো হয়। সরাসরি বিপিও বা কল সেন্টার জবের জন্য ট্রেনিং নিতে হলে এরকম ধরণেরও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে, যেগুলিতে  পেশায় ঢোকার আগে ট্রেনিং নেওয়া যেতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, এই ধরণের পেশায় কিন্তু অনেক বেশি পরিমাণে ফ্রেশারদেরই সুযোগ দেওয়া হয়। ফ্রেশারদের সুযোগ দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কোম্পানিও বা প্রতিষ্ঠান তাঁদের নিজস্ব প্রোফাইল বা চাহিদা অনুযায়ী কর্মী নিজেদের উপযোগী দিয়ে নেয়।

কী ধরনের কাজ রয়েছে?

বিভিন্ন ধরনের বা কজের কল সেন্টার রয়েছে। ইনবাউন্ড- ডোমেস্টিক বা ইন্টারন্যাশনাল এরকম ধরনের প্রকারভেদ রয়েছে। ডোমেস্টিক- ক্ষেত্রে সাধারণ রাজ্য বা দেশের কাস্টোমার বা উপভোক্তাদের সার্ভিসিং প্রদানের কাজ হয়ে থাকে। ইন্টারন্যাশনাল -এর ক্ষেত্রে বাইরের দেশের উপভোক্তাদের সার্ভিস দেওয়ার জন্য  হেলপ ডেস্ক তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে কোম্পানির নিজস্ব হেলপ ডেস্ক থাকে, আবার অনেক ক্ষেত্রে এজেন্সি মারফত সাপোর্ট দেওয়া হয়। এর জন্য বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং গুরুত্বপূর্ণ ভমিকা নেয়।

কোম্পানিগুলিতে প্রথম ফ্রেশার হিসাবে নিয়োগ হওয়ার পর কল সেন্টার অপারেটর বা কাস্টোমার কেয়ার এক্সিকিউটিভ হিসাবে কাজ করা যেতে পারে। কাজ ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে একত্রে একটি কল সেন্টার অপারেটর টিমার লিডার হিসাবে উন্নীত হওয়ার, কল সেন্টার সুপারভাইজার বা ম্যানেজার পদে বা কাজ করার সুযোগ তৈরি হয়।

পেশায় চাহিদা কেমন?

একবিংশ শতাব্দীর গোড়া থেকেই কাস্টোমার কেয়ার সার্ভিসমূলক কাজের প্রসার ঘটেছে ভারতে। যেটা আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এক বিশাল কর্মজগত সৃষ্টি করেছে যুবক- জন্য। কলেজ পড়ুয়ারা বা দূরশিক্ষায় পাঠরত ছাত্র- এই রকম পেশাকে বেছে নিচ্ছে সাময়িক পেশা হিসাবে। যে কোন ধরণের ব্যাঙ্কিং, প্রোডাক্ট নির্ভর কোম্পানিং, সার্ভিসিং এজেন্সি, অনলাইন মার্কেটিং, রিজারভেশন ফিল্ড, মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানি, ইনসিওরেন্স কোম্পানি থেকে সরকারি ক্ষেত্রেও হেল্প ডেস্ক বা ইনফরমেশন ডেস্ক রাখা হচ্ছে উপভোক্তাদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য। স্বাভাবিকভাবেই, এই পেশায় কীরকন চাহিদা সেটা আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। নিজের কমিউনিকেশন স্কিলে দক্ষ হয়ে উঠতে পারলে রাজ্যে, রাজ্যের বাইরে অজস্র রাস্তা খোলা রয়েছে এই পেশায় আসার জন্য।

 

Advertisement

Imprint
Responsible for the content:
jibikadishari.co.in
Privacy & Terms of Use:
jibikadishari.co.in
Mobile website via:
WordPress AMP Plugin
Last AMPHTML update:
04.05.2024 - 04:07:20
Privacy-Data & cookie usage: