কসমেটোলজিস্ট

2091
0
cosmetologist-picture

কসমেটোলজিস্ট কি?

বিউটি থেরাপি থেকে শুরু করে মেডিকেল ট্রিটমেন্ট সমস্ত রকমের কাজে নিযুক্ত থাকতে হয় কসমেটোলজিস্টদের। অনেক ক্ষেত্রে কসমেটোলজিস্টরা বিউটিসিয়ান নামেও পরিচিত হন। বর্তমানে কসমেটোলজি কোর্সের বিভিন্ন শাখা তৈরি হয়ে গেছে। হেয়ার, স্কিন এবং বডি ট্রিটমেন্ট নিয়ে স্পেশালাইজেশন করা যেতে পারে এই বিষয়ে।

কসমেটোলজিস্টদের জন্য কি কোর্স?

বর্তমানে একাধিক প্রতিষ্ঠান থেকে কসমেটোলজি সম্পর্কে কোর্স করানো হয়ে থাকে। কসমেটোলজির উপর ডিপ্লোমা কোর্স এবং কোনো বিশেষ বিষয় স্পেশালাইজেশন করে পেশার জগতে প্রবেশের পথ সুগম হয়। এই ধরনের কোর্সগুলিতে হেয়ার কাটিং, স্টাইলিং, কালারিং, পার্মানেন্ট ওয়েভিং, মেনিকিওর, পেডিকিওর থেকে শুরু করে নেইল ডিজাইনিং, মেক- ফেসিয়াল, স্কিন কেয়ার, স্কিন ট্রিটমেন্ট, হেয়ার ট্রিটমেন্ট একাধিক বিষয়ে পড়ানো হয়ে থাকে। হেয়ার, স্কিন বা নেইলের ওপর স্পেশালাইজেশন করে হেয়ার স্টাইলিস্ট/ হেয়ারড্রেসার, স্কিন কেয়ার স্পেশালিষ্ট বা নেইল টেকনিসিয়ান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠানে প্রফেশনাল কোর্স হিসাবে বিউটিকেয়ার, স্পা ম্যানেজমন্ট, হেয়ার ট্রিটমেন্ট- মতো কোর্সও করানো হয়ে থাকে। ১ বছর, ছয় মাস বা তিন মাসেরও কোর্স হয়ে থাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে।

কোর্সের বিষয় কি থাকে?

কসমেটোলজি কোর্স করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ধরনের যোগ্যতা চাওয়া হয়ে থাকে। সাধারণত মাধ্যমিক বা সমতুল উত্তীর্ণ এবং অনেক ক্ষেত্রে উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ ছাত্র- এই ধরনের কোর্সের জন্য গ্রহণযোগ্য হন। তবে এই ধরণের কোর্সের শেষে কাজের জন্য লাইসেন্স- প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। দ্য অ্যাসোসিয়েশন অব বিউটি থেরাপি অ্যান্ড কসমেটোলজি (ABTC) থেকে লাইসেন্স প্রদান করা হয়ে থাকে। স্যালুন বা স্পা করতে চাইলে লাইসেন্সের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে বর্তমানে পাবলিক হেলথ, হাইজিন এবং প্রফেশনাল এথিক্সের কথা মাথায় রেখে লাইসেন্সের আবশ্যিকতা আনা হচ্ছে। তবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হাতে কলমে শেখার সুযোগ থাকলেও নিজের দক্ষতা এবং উত্কর্ষতা এই ধরনের পেশায় নিজেকে উন্নত করতে অধিক কার্যকরী হয়।

কোথায় করানো হয়?

একাধিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে এই ধরনের কোর্সের জন্য। মূলত দিল্লি, মুম্বাইতে এই সমস্ত কোর্স করার প্রতিষ্ঠানের আধিক্য রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল পলিটেকনিক ফর উইমেন দিল্লি, ল্যাকমে ট্রেনিং অ্যাকাডেমি মুম্বাই, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অলটারনেট মেডিসিন কলকাতা, তামিলনাড়ু ওপেন ইউনিভার্সিটি, ইনস্টিটিউট অব কসমেটিক্স অ্যান্ড লেজার সায়েন্স মুম্বাই এই সব প্রতিষ্ঠানে কসমেটোলজি নিয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। তবে বিদেশে এঈ ধরনের কোর্স নিয়ে পড়াশুনার সুযোগ স্বাভাবিকভাবেই বেশি। বিশেষ করে আমেরিকা, কানাডা, প্যারিসে আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

কি ধরনের কাজ?

একজন কসমেটোলজিস্টকে হেয়ার কাটিং, ট্রিমিং, শেপিং থেকে শুরু করে কালারিং, ব্রাশিং, কম্বিং বিভিন্ন কাজে দক্ষতা আনে হয়। স্কিন থেরাপি বা ট্রিটমেমন্টের উপর যারা কাজ করতে চায় তাঁদের কসমেটিক্স, ক্রিম, লোশন প্রোডাক্ট সমন্ধে বহুল ধারণা, মেক- ম্যাসেজিং ট্রিটমেন্ট, থেরাপি প্রভতি নানা ধরণের কাজ রয়েছে। এমনকি ক্রনিক বা স্ক্যাল্প ট্রিটমেন্ট- জন্য পরামর্শ প্রদানের ব্যাপারেও খেয়াল রাখতে হয়। আধুনিক যুগে বিউটি ট্রিটমেন্ট ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ, প্রোডাক্টের উন্নতি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেই সমস্ত প্রোডাক্ট সম্পর্কে আপডেট, ইকু্যয়িপমেন্ট সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা জরুরী। কাস্টোমার স্যাটিস্ফিকেশন দিকটি বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হয়। কোনো এক জায়গায় কাজ করা অভিজ্ঞতা সঞ্চয় এবং তার পাশাপাশি নিজের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পেশায় উন্নতি করার রাস্তা রয়েছে।

পেশার চাহিদা কেমন?

সার্বিকভাবে সারা বিশ্ব তথা ভারতেও এই ধরনের পেশার উন্নতি হচেছ খুব দ্রুত। মানুষের মধ্যে ফ্যাশন এবং বিউটি সমন্ধে সচেনতা বিউটি কেয়ার ইউনিট, পার্লার বা সেলুন- সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করছে প্রতিনিয়ত। নামী- বিউটি কেয়ার প্রতিষ্ঠান, সেলুন, পার্লারে কাজের চাহিদা গত কয়েক বছরে কয়েকগুণ বেড়েছে। তবে এই কোর্সের পর নিজের জন্য ব্যবসা চালু করার বিষয়টিও ফলপ্রসু। হেয়ারস্টালিষ্ট বা কসমেটোলজিস্ট হিসাবে নিজের সেলুন, পার্লার বা স্পা সেন্টার চালু করে অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করার বহুল সুযোগ রয়েছে। এর বাইরেও ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও কাজের সুযোগ রয়েছে অনেক। কসমেটোলজির প্রশিক্ষণের প্রতিষ্ঠানগুলিতেও পরবর্তীকালে কনসালটেন্ট বা প্রশিক্ষক হিসাবে কাজ করার রাস্তাও খোলা থাকছে।