কী কথায় কী কথা

schedule
2018-04-20 | 09:43h
update
2018-04-20 | 11:03h
person
জীবিকা দিশারী
domain
জীবিকা দিশারী

ট্রোজান হর্স

কম্পিউটার-নেট জগতের আতঙ্ক ট্রোজান হর্স। সার্থক নাম। খ্রিস্টপূর্ব ত্রয়োদশ বা দ্বাদশ শতকের ঘটনা, যা মহাকাব্যাকারে হোমারের ‘ওডিসি’-তে গ্রথিত হয় খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতকে। প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর আগের ইতিহাসের এক কালো রাত্রির কথা। যা ট্রয়ের যুদ্ধের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। ট্রয়বাসীর জীবনে বড় ধাপ্পা। আর সেই ধাপ্পা বা বোকা বানানোর কাহিনিই ট্রোজান হর্স বা ট্রয়ের ঘোড়া নামে খ্যাত। গল্পটা এই রকম— ট্রয়ের যুদ্ধে গ্রিকরা ট্রয়বাসীকে একটা বিশাল কাঠের ঘোড়ার মাধ্যমে বোকা বানিয়ে হারিয়ে দিয়েছিল। আর এই বোকা বানানোর বুদ্ধিটি যাঁর মাথা থেকে এসেছিল তিনি গ্রিক বীর সেনাধ্যক্ষ ওডিসিয়ুস। এই ওডিসিয়ুসের পরিকল্পনা মতোই একটা বিশাল কাঠের ঘোড়ার মধ্যে পরিকল্পিতভাবে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল পঞ্চাশজন দুর্ধর্ষ গ্রিক যোদ্ধাকে। যার মধ্যে স্বয়ং ওডিসিয়ুসও ছিলেন। কথিত আছে এই বিশাল কাঠের ঘোড়াটি তৈরি করছিলেন এপিয়ুস নামের এক দক্ষ ছুতোর। ছল করে সেই ঘোড়াটিকে ট্রয়ের রাজপথে ফেলে রেখে গ্রিক সৈন্যদের একটা দল জাহাজে ফিরে যায় এবং সেখানে থেকে যান সাইনন নামের এক চতুর সৈন্য যিনি প্রচার করেছিলেন, গ্রিকরা যাবার সময় এই ঘোড়াটিকে উপহার দিয়ে গেছে দেবী আথেনার অর্ঘ্য স্বরূপ। সাইননের এই কথা সরল মনে বিশ্বাস করেন ট্রয়বাসীরা। মহানন্দে ট্রয়বাসী সেই ঘোড়াটিকে টেনে নিয়ে যান আথেনার মন্দির চত্বরে। সেখানে মধ্যরাতে অকস্মাৎ সেই ঘোড়ার পেটের দরজা খুলে ভেতর থেকে বেরিয়ে এল ওডিসিয়ুস সহ দুর্ধর্ষ সৈন্যরা। যাদের মধ্যে ছিলেন ওডিসিয়ুস স্বয়ং। সেই ঘুমন্ত নগরী হঠাৎ আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে গেল। রক্তপাত-হাকারের কান্নায় ইউরোপ মহাদেশের সবচেয়ে সম্পদশালী নগরী ট্রয় এক রাতের মধ্যে পরিণত হল ধ্বংসস্তূপে। সেই রক্তমাখ ট্রয় নগরী থেকে দেবী আফ্রোদিতির সহায়তায় পালিয়ে বেঁচেছিলেন বীর ইনিয়ুস, যিনি পরে নতুন সভ্যতা গড়ে তুলেছিলেন। মানুষ ট্রয়যুদ্ধের এই ঘটনাকে স্মরণ করে এসেছে যা ট্রোজান হর্স নামেই পরিচিত। কিন্তু বর্তমান কম্পিউটার বিজ্ঞানের দুনিয়ায়ও এই ট্রোজান হর্স সমান ভাবে বোকা বনিয়ে চলেছে লক্ষ-লক্ষ ব্যবহারকারীকে। কম্পিউটারে ট্রোজান হর্স বলতে বোঝায় কোনো ক্ষতিকর প্রোগ্রাম যা দুস্টু লোকেরা অন্য কোনো লোভনীয় অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যারের মধ্যে সুকৌশলে ঢুকিয়ে দেয় অন্যের কম্পিউটারের প্রোগ্রাম, ডেটা ইত্যাদির ক্ষতি বা মজা করার উদ্দেশ্যে। লোভনীয় সফটওয়্যারটি যিনি ডাউনলোড করে ব্যবহার করবেন তাঁর মেশিনে সংক্রামক হবে সেই ট্রোজান হর্সের ভাইরাস। কখনো-কখনো শত্রুতা করতেও গোপনে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে নিঃশব্দে চালান করে ‘ভাইরাস ওডিসিয়ুস’। তার বাহন হয় পেন ড্রাইভ, ইমেল বা অন্য কোনো মাধ্যম। শুধু ট্রোজান হর্সই নয়, ম্যালওয়্যার-এর মতো অনেক সুচতুর ওডিসিয়ুস ঘাপটি মেরে রয়েছে কম্পিউটার বিশ্বে।

Advertisement

Advertisement

Imprint
Responsible for the content:
jibikadishari.co.in
Privacy & Terms of Use:
jibikadishari.co.in
Mobile website via:
WordPress AMP Plugin
Last AMPHTML update:
02.05.2024 - 11:09:43
Privacy-Data & cookie usage: