কী কথায় কী কথা

schedule
2018-04-04 | 13:20h
update
2018-04-04 | 13:41h
person
জীবিকা দিশারী
domain
জীবিকা দিশারী

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কথাবার্তায় এমন কিছু শব্দ এসে পড়ে বা ব্যবহার করি যার আড়ালে লুকিয়ে থাকে আকর্ষণীয় কাহিনি। সেগুলো জানা থাকলে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে অনেক সুবিধে হয়, জানা উচিতও। জীবিকা দিশারীর এই বিভাগে সেরকম ইংরেজি-বাংলা শব্দের ব্যুৎপত্তিগত দিক সহ উৎপত্তির কাহিনি তুলে ধরা হবে ধারাবাহিকভাবে।

হ্যাট ট্রিক

কথাটা শুধু হকি-ফুটবল-ক্রিকেটেই নয়, জীবনের অন্যান্য বহু ক্ষেত্রেও ঢুকে পড়েছে। পরপর তিন বার কিছু করতে সফল হলে হ্যাটট্রিক বলে স্বীকৃতি পায়। যদিও কথাটা শুরু হয়েছে ক্রিকেট খেলা থেকে। ১৮৫৮ সালে একটি অল-ইংল্যান্ড দলের হয়ে সাউথ ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে এক ক্রিকেট ম্যাচে বোলার এইচ এইচ স্টিফেনশন বিপক্ষীয় উইকেটের ৩টি স্টাম্প পর-পর ৩টি বলে উড়িয়ে দেন। খেলাটি হয়েছিল শেফিল্ডের হাইডপার্ক ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। এই কৃতিত্বের জন্য তাঁকে একটি টুপি উপহার দেওয়া হয়। তারপর হকি এবং পরে ফুটবলেও চালু হয় পরপর ৩ গোল করলে হ্যাটট্রিকের রেওয়াজ। পরপর ৩ সাফল্যে উৎসাহ হিসাবে এই পুরস্কারের ‘ট্রিক’ দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

Advertisement

বক্সিং ডে

এই শব্দবন্ধের সঙ্গে মুষ্টিযুদ্ধ বা বক্সিং-এর কোনো সম্পর্ক নেই। এই বক্সিং ডে-র সূত্রপাত দেড়শো বছরেরও আগে। ১৮৩০ সালে এর প্রথম ব্যবহার মেলে। অক্সফোর্ড ডিকশনারিতে প্রথম লিপিবদ্ধ হয়। বক্সিং ডে বা ক্রিসমাস বক্স হিসেবেও এই শব্দটি পরিচিত। ক্রিসমাস-এর পর প্রথম উইক ডে বা প্রথম কাজের দিনকেই ‘বক্সিং ডে’ বা ক্রিস্টমাস ডে নামে অভিহিত করা হয়। যদিও এই দিনটি ইউরোপের নানান দেশে ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। ক্রিশ্চিয়ান ক্যালেন্ডার হিসাবে ২৬ ডিসেম্বর দিনটি নির্দিষ্ট থাকলেও সেটি যদি রবিবার পড়ে তবে তার পরের সোমবারটি বক্সিং ডে বা পাবলিক হলি ডে বা ব্যাঙ্ক হলিডে হিসেবে পালিত হয়। মার্কিন যুক্ত রাজ্য, গ্রেট ব্রিটেন প্রভৃতি মূলত খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের দেশে এই দিনটি তাৎপর্যময়। আয়ারল্যান্ড, জার্মানি, পোল্যান্ড, স্ক্যান্ডিভেনিয়া প্রভৃতি ইউরোপীয় কয়েকটি দেশে এই দিনটি সেন্ট স্টিফেন্স ডে নামেও প্রচলিত। এই দিনটিকে ঘিরেই উৎসবে মেতে ওঠে এসব দেশের মানুষজন। অনেকেই এই পবিত্র দিনে ‘ক্রিস্টমাস বক্স’ বা নানান উপহার সামগ্রী তুলে দেন আত্মীয় বন্ধুবান্ধব প্রভৃতি একে-অপরের হাতে। দরিদ্র মানুষকেও নানান উপহারসামগ্রী উপহার দেন ধনীরা। অস্ট্রেলিয়ায় এই দিনটি ফেডারেল পাবলিক হলিডে হিসেবে পালিত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুয়টেস থেকে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ইত্যাদি বিভিন্ন দেশে এই সময় শুরু হয়ে যায় বিরাট সেলের বাজার। সমস্ত দোকান-বাজারে জিনিস কেনাকাটার ওপর দেদাড় ছাড়ের ছড়াছড়ি। নানান ধরনের পসরায় সেজে ওঠে দোকানপাঠ। সমস্ত দোকানে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় জিনিসপত্র কেনাকাটায়। দোকানিরাও দোকান খুলে দেন ভোর থাকতে-থাকতেই। এবং এই কেনাকাটাকে ঘিরে এক মহোৎসবে পরিণত হয় এই বক্সিং ডে। কেনাকাটার ঢল নামে রাস্তায় রাস্তায়। অনেকেই একে বলে ‘বক্সিং উইক’। শুধু কেনাকাটার বাজারেই নয়, খেলার দুনিয়াতেও এই বক্সিং ডে-র প্রভাব কম নয়। অস্ট্রেলিয়া তাদের মেলবোর্ন ক্রিকেট মাঠে নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড প্রভৃতি কোনো খেলতে আসা দেশের সঙ্গে টেস্ট ক্রিকেট শুরু করে এই বক্সিং ডে উপলক্ষেই। বিভিন্ন মাঠে সম্মানজনকভাবে ঘোড়ার রেসও হয়ে থাক এই দিনটিকে ঘিরে। তাতে অংশ নেন অনেক খ্যাত ব্যক্তিও। সব মিলিয়ে যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন শুধু বড় দিন হিসেবেই স্মরণীয় নয়, আনন্দ উৎসব ও নানা ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পরের দিন ২৬ ডিসেম্বর বক্সিং ডে হিসাবে সমানভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে খ্রিস্টধর্মাবলম্বী বিভিন্ন দেশে।

Advertisement

Imprint
Responsible for the content:
jibikadishari.co.in
Privacy & Terms of Use:
jibikadishari.co.in
Mobile website via:
WordPress AMP Plugin
Last AMPHTML update:
16.04.2024 - 07:10:54
Privacy-Data & cookie usage: