গ্রামীণ ডাকসেবক পদে আবেদন করতে পারবেন মাদ্রাসা উত্তীর্ণরাও: হাইকোর্ট

624
1
current affairs

ডাকবিভাগে পশ্চিম বঙ্গ সার্কল থেকে ৫৭৭৮ জন গ্রামীণ ডাকসেবক নেবার জন্য অনলাইন আবেদন গ্রহণ সম্প্রতি শেষ হয়েছে। প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য মাধ্যমিকের নম্বরের ভিত্তিতে মেধাতালিকা তৈরি হবে, অন্য কোনো পরীক্ষার কথা বলা হয়নি। উচ্চতর যোগ্যতার প্রার্থীদেরও মাধ্যমিকের নম্বরই কেবল বিবেচিত হবে, উচ্চতর যোগ্যতার জন্য কোনো বাড়তি মূল্যায়ন হবে না।  যাঁরা একবারের সুযোগেই মাধ্যমিক পাশ করেছেন তাঁদের বেশি মেধাবী বলে গণ্য করা হবে কম্পার্টমেন্টালে পাশ করা প্রার্থীদের থেকে।

এরাজ্যে গ্রামীণ ডাকসেবক নিয়োগের উদ্দেশ্যে প্রথমে ৪৯৮২ পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি বেরোয় ২০১৭-র ২০ এপ্রিলে, আবেদন গ্রহণ করা হয় ২৪ মে ২০১৭ পর্যন্ত। কিন্তু আবেদনের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা যেহেতু দশম শ্রেণি পাশ চাওয়া হয়, সেইমতো এরাজ্যের মাদ্রাসা থেকে দশম শ্রেণি উত্তীর্ণ প্রার্থীরাও আবেদন করেন এবং সেই আবেদন গ্রাহ্যও হয়। পরে এবছর জানুয়ারিতে সেই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিটিই বাতিল করে দেওয়া হয় কোনো কারণ না দেখিয়ে।

আবার নতুন করে অনলাইন আবেদন চেয়ে বিজ্ঞপ্তি বেরোয় মাসদেড়েক আগে, ৪ এপ্রিল। তারপর আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মাদ্রাসা ছাড়া অন্যান্য বোর্ডের দশম শ্রেণি উত্তীর্ণ যোগ্যতাই কেবল গ্রাহ্য হবে। ফলে প্রথমবারের বিজ্ঞাপনের উত্তরে মাদ্রাসা পাশ যোগ্যতায় যাঁদের আবেদন অন্যান্যদের মতোই গ্রাহ্য হয়েছিল এবার তাঁরা অযোগ্য বিবেচিত হলেন।

আগেরবার আবেদন করে গ্রাহ্য হয়েছিল এমন কিছু মাদ্রাসা উত্তীর্ণ প্রার্থী— মোজেম্মেল হোসেন সহ আরও ৫ জন সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (ক্যাট)-এ সুবিচার প্রার্থনা করেন। ক্যাট এক অন্তর্বর্তী রায়ে নির্দেশ দেয় তাঁদের আবেদনের সুযোগ দিতে হবে এবং অফলাইনে তাঁদের আবেদন গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু নিয়োগকর্তৃপক্ষ সেই আবেদন গ্রহণ করেননি। আদালত তার কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিলে ডাকবিভাগ একটি বিজ্ঞপ্তির উল্লেখ করে জানায়, সেই সিদ্ধান্ত মাফিক এমন করা হয়েছে।

ডাকবিভাগের এই ব্যাখ্যাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয় এবং তাতে শামিল হন পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ, ছাত্রসংগঠন এসআইও এবং বেঙ্গল মাদ্রাসা এডুকেশন ফোরামও। আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ভারত সরকারের বিভিন্ন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মাদ্রাসা পর্ষদের দশম শ্রেণি উত্তীর্ণ যোগ্যতা অন্যান্য পর্ষদের দশম শ্রেণি উত্তীর্ণের সমতুল বলে গণ্য করা হয়। তাহলে ডাকবিভাগের চাকরির ক্ষেত্রে তার অন্যথা হবে কেন?

মামলায় উচ্চ আদালতের বিচারপতি প্রতীক প্রকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮ জুন এক অন্তর্বর্তী নির্দেশে বলেন, মাদ্রাসার দশম শ্রেণি উত্তীর্ণ প্রার্থীরা অফলাইনে বা রেজিস্টার্ড পোস্টে নতুন করে আবেদন করতে পারবেন, এজন্য ১০ দিন সময় দেওয়া হোক, তবে তাঁদের নিয়োগপ্রক্রিয়া নির্ভর করবে মামালার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির ওপর। এই সব পক্ষকে তিনি হলফনামার আকারে বক্তব্য পেশ করতে বলেন। পরবর্তী শুনানি হবে আদালতের গ্রীষ্মাবকাশের পর।

যদিও ইন্ডিয়া পোস্ট-এর জিডিএস আবেদন সংক্রান্ত সাইটে বা পশ্চিমবঙ্গ সার্কলের রিক্রুটমেন্ট-এর সাইটে মাদ্রাসা উত্তীর্ণদের আবেদনের সুযোগ সংক্রান্ত কোনো নির্দেশ বা উচ্চবাচ্য আজ পর্যন্ত (২৪ মে বেলা ১টা পর্যন্ত) দেখা যায়নি।