নেট-এর জুন ২০১৯ পরীক্ষার জন্য অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। আবেদন করা যাবে ৩০ মার্চ ২০১৯ তারিখ পর্যন্ত। এই পরীক্ষার মাধ্যমে দেশের সমস্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ও জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপের জন্য আবেদন করার যোগ্যতা নির্ধারিত হয়। শুধুমাত্র অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পদের জন্য কিংবা একই সঙ্গে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ও জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপের জন্য এই পরীক্ষা দিতে পারেন। কিসের জন্য পরীক্ষা দিতে চান তা দরখাস্তে জানাতে হবে। প্রথম ক্ষেত্রে পরীক্ষায় সফল হলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শুধুমাত্র অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পদের জন্য কোথাও আবেদন করতে পারবেন, দ্বিতীয় ক্ষেত্রে কোনো কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বা সম্পৃক্ত বিষয়ে গবেষণা বা পিএইচডি/এমফিলের সুযোগ পেলে ৩ বছরের জন্য (ইউজিসির ফল বেরোনোর পর বা গবেষণায় যোগ দেওয়ার সময় থেক) ইউজিসির ফেলোশিপ পাবেন, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পদের জন্যও তাঁরা আবেদন করতে পারবেন।
নেট আবশ্যিক নয় কাদের: ২০০৯ সালের ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্টস কমিশন (মিনিমাম স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড প্রসিডিওর ফর দ্য অ্যাওয়ার্ড অব দ্য পিএইচডি ডিগ্রি) রেগুলেশন অনুযায়ী যাঁরা পিএইচডি পেয়েছেন তাঁদের কোথাও অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পদে আবেদনের জন্য নেট/ স্লেট/ সেট দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। যাঁরা ১৯৮৯-এর আগেই ইউজিসি / সিএসআইআর জেআরএফ পরীক্ষা পাশ করেছেন তাঁদেরও এই পরীক্ষা দেওয়ার দরকার নেই। যাঁরা ২০০২-এর ১ জুন-এর আগেই ইউজিসির অ্যাক্রেডিটেড সেট পরীক্ষায় সফল হয়েছেন তাঁরাও অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরের পদের জন্য সারা দেশের যে-কোনো জায়গায় আবেদন করতে পারেন নেট না দিয়েও। ওই তারিখের পরে সেট পাশ হলে শুধু সেই রাজ্যের কোনো কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা যাবে, অন্য রাজ্যে করতে হলে নেট সফল হতে হবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: ১) ইউজিসি অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠান থেকে হিউম্যানিটিজ (ল্যাঙ্গুয়েজ সহ), সোশ্যাল সায়েন্স, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড অ্যাপ্লিকেশন, ইলেক্ট্রনিক সায়েন্স প্রভৃতি সংশ্লিষ্ট শাখায় অন্তত ৫৫ শতাংশ নম্বর সহ মাস্টার ডিগ্রি করে থাকতে হবে। কাছাকাছি ভগ্নাংশকে পুরো নম্বর ধরা যাবে না। ওবিসি, তপশিলি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী প্রার্থীরা নম্বরের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ ছাড় পাবেন। ২) যাঁরা চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষায় বসবেন বা যাঁদের চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষার ফলাফল এখনও প্রকাশিত হয়নি তাঁরাও শর্তসাপেক্ষে এই পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারবেন। ৩) পিএইচডি ডিগ্রিধারী যাঁরা ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৯১-এর মধ্যে মাস্টার ডিগ্রি করেছেন তাঁরাও নম্বরের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ ছাড় পাবেন। ৪) পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন স্তরে যে বিষয় ছিল সেই বিষয়েই আবেদন করতে হবে। কোন-কোন বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করলে নেট পরীক্ষা দিতে পারবেন এবং যেসমস্ত প্রতিষ্ঠান এই নেট পরীক্ষার ব্যাবস্থাপনায় আছে তার তালিকা এবং সাবজেক্ট কোড পাবেন নিচের ওয়েবসাইটে।
বয়সসীমা: অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পদের ক্ষেত্রে বয়সের কোনো ঊর্ধ্বসীমা নেই। জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ পদের ক্ষেত্রে ১ জুন ২০১৯ তারিখ অনুযায়ী বয়স হতে হবে ৩০ বছরের মধ্যে। মহিলা, তপশিলি, ওবিসি (নন-ক্রিমি লেয়ার) ও শারীরিক প্রতিবন্ধী প্রার্থীরা বয়সের ঊর্ধ্বসীমায় ৫ বছর পর্যন্ত ছাড় পাবেন। কেবলমাত্র কেন্দ্রীয় তালিকাভুক্ত ওবিসিরা (নন-ক্রিমি লেয়ার) ওবিসি হিসাবে বিবেচিত হবেন। গবেষণার অভিজ্ঞতা যাঁদের আছে তাঁরা গবেষণার সময়কাল ছাড় পাবেন সর্বাধিক ৫ বছর পর্যন্ত। এলএলএম ডিগ্রিধারীরা ৩ বছর পর্যন্ত বয়সের ছাড় পাবেন। সশস্ত্র বাহিনীতে কাজ করে থাকা প্রার্থীরাও ৫ বছর পর্যন্ত ছাড় পাবেন। কারও ক্ষেত্রেই বয়সের ছাড় কোনো ভাবেই ৫ বছরের বেশি হবে না।
তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীরা বয়সসীমা, নম্বর, ফি ইত্যাদি ক্ষেত্রে তপশিলি প্রভৃতি প্রার্থীদের সমান ছাড় পাবেন।
পরীক্ষাপদ্ধতি: পরীক্ষা হবে জুনের ২০, ২১, ২৪-২৮ তারিখে। কম্পিউটার ভিত্তিক, অবজেক্টিভ টাইপের। সব প্রশ্নই বাধ্যতামূলক। প্রতিটি প্রশ্নের মান ২। কোনো নেগেটিভ মার্কিং নেই। সারাদেশে বড়-বড় শহরগুলিতে এই পরীক্ষা হবে, ৮১টি বিষয়ে। সারা দেশে ২৬৩টি কেন্দ্রে। পশ্চিমবঙ্গে ১১টি পরীক্ষাকেন্দ্র (ASANSOL WB01, BARDHAMAN WB02, DARJEELING WB03, DURGAPUR WB04, HALDIA WB05, HOOGHLY WB06, HOWRAH WB07, KALYANI WB08, KHARAGPUR WB09, KOLKATA WB10, SILIGURI WB11)। ৪টি কেন্দ্র বাছতে হবে পছন্দের পরম্পরায়।
মোট ১৮০ মিনিট অর্থাৎ ২ ঘণ্টায় দুই পেপারের পরীক্ষা, মাঝে কোনো বিরতি নেই। পেপার ওয়ানে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। ৫০টি প্রশ্ন থাকবে। প্রার্থীর টিচিং/রিসার্চ অ্যাপ্টিটিউড যাচাইয়ের জন্য প্রশ্ন থাকবে রিজিনিং এবিলিটি, কম্প্রিহেনশন, ডাইভারজেন্ট থিঙ্কিং (বহুমুখী চিন্তাশক্তি) এবং জেনারেল অ্যাওয়্যারনেস বিষয়ে।
পেপার-টু-তে ২০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে, নিজের নির্বাচিত বিষয়টির ওপর (আগেকার নিয়মের পেপার-টু ও পেপার-থ্রি পুরোটা)। ১০০ প্রশ্ন থাকবে। প্রশ্ন হবে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে।
দুই শিফটে অর্থাৎ দুই ব্যাচে পরীক্ষা হবে, প্রথম শিফট সকাল সাড়ে নটা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত, দ্বিতীয় শিফট বেলা আড়াইটা থেকে সাড়ে পাঁচটা।
পরীক্ষার বিস্তারিত তথ্য ও সিলেবাস পাবেন https://www.ugcnetonline.in/syllabus-new.php ওয়েবসাইটে। প্রসঙ্গত, এবারের পরীক্ষার সিলেবাস বেশ বদলানো হয়েছে। কোনো অ্যাডমিটকার্ড পাঠানো হবে না। উপরের ওয়েবসাইট থেকে কার্ড ডাউনলোড করতে হবে। ১৫ মে থেকে ওয়েবসাইটে অ্যাডমিট কার্ড পাওয়া যাবে, ব্যক্তিগত ভাবে কাউকে পাঠানো হবে না। পরীক্ষার দিন অ্যাডমিট কার্ড ছাড়াও একটি ফটো আইডেন্টিটি কার্ড সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে।
আবেদনের ফি: ফি বাবদ দিতে হবে ৮০০ টাকা। ওবিসি (নন-ক্রিমি লেয়ার) ও অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে ৪০০ টাকা এবং তপশিলি জাতি, তপশিলি উপজাতি, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ২০০ টাকা। সবক্ষেত্রেই সঙ্গে জিএসটি। SBI/ HDFC/ Syndicate/ ICICI Payment Gateway-র মাধ্যমে ডেবিট কার্ড/ ক্রেডিট কার্ড/ নেট ব্যাঙ্কিং/ ইউপিআইয়ের মাধ্যমে বা ডাউনলোড করা ই-চালানের মাধ্যমে এসবিআই-এর যে-কোনো শাখায় ক্যাশ ডিপোজিট হিসাবে ফি দেওয়া যাবে। ১ এপ্রিল রাত ১১-৫০ পর্যন্ত (ই-চালানের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের কাজের সময় পর্যন্ত)।
আবেদনের পদ্ধতি: www.ntanet.nic.in ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইন আবেদন করতে হবে, ৩০ মার্চ রাত ১১-৫০-এর মধ্যে। আবেদনের কিছু সংশোধন অনলাইনেই করা যাবে ৭-১৪ এপ্রিল। নিজের সাম্প্রতিক ফটো (১০-২০০ কেবি) ও স্বাভাবিক সই (৪-৩০ কেবি) স্ক্যান করে রাখতে হবে জেপিজি/জেপেগ ফর্ম্যাটে। আবেদনের সময় যে অ্যাপ্লিকেশন নম্বর পাবেন সেটি পরে লাগবে, টুকে রাখবেন।
পরীক্ষা কেন্দ্রের তালিকা ও কোড, সাবজেক্ট কোড, রাজ্য কোড, সেন্টার কোড এবং মিডিয়াম কোড ইত্যাদি পাবেন উপরোক্ত ওয়েবসাইটে। www.nta.ac.in এবং www.ntanet.nic.in ওয়েবসাইট থেকে অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় জানা যাবে। পুরো নেট বুলেটিন পাবেন এই লিঙ্কে:
https://ntanet.nic.in/NTANETCMS/Handler/FileHandler.ashx?i=File&ii=2&iii=Y
পরীক্ষার ফল বেরোবে ১৫ জুলাই।