শিশুদের ব্যাগের বোঝা কমিয়ে সুকুমার বৃত্তিকে আরও বেশি করে জাগিয়ে তোলার প্রয়াস নিয়ে ভাবনাচিন্তা অনেক দিনের। সেই বিষয়েই নতুন করে আলোকপাত করলেন মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি এন কিরুবরণ। উল্লেখ্য, গত ২০১৭ সালে তামিলনাড়ুর শীর্ষ আদালতের আইনজীবী এম পুরুষোত্তম সিবিএসসির একটি বিজ্ঞপ্তিকে ভিত্তি করে মামলা করেছিলেন। যেখানে তিনি দাবি করেছিলেন সিবিএসসি বিদ্যালয়গুলিকে শুধুমাত্র এনসিইআরটির বই ব্যবহার করতে বলা হোক। বাড়তি বই যেন অভিভাকদের কিনতে বা পড়াতে বাধ্য করা না হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এন কিরুবরণ এই রায়ে বলেছেন, কোনোভাবেই শিশুদের বিশেষ করে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো শিশুকেই ‘হোমটাস্ক’ হিসেবে বাড়তি পড়ার চাপ দেওয়া যাবে না। শুধু তা-ই নয়, আদালত এই নির্দেশও দিয়েছে যে প্রয়োজনে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে ‘ফ্লাইং স্কোয়াড’ বা পরিদর্শনকারী দল তৈরি করতে হবে যাঁরা স্কুলে-স্কুলে পরিদর্শন করে দেখবেন কেউ এই নির্দেশ ভাঙছেন কিনা। যদি কোনো স্কুল সেই নিয়ম না মানে তাহলে সেইসব স্কুলের সরকারি অনুমোদন বাতিল করতে হবে। মোদ্দা কথা, সারা দেশে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া শিশুদের এনসিইআরটি প্রকাশিত নির্দিষ্ট কিছু বইয়ের বাইরে অতিরিক্ত কোনো বই পড়তে বাধ্য করানো যাবে না বা হোমওয়র্ক জাতীয় পড়ার চাপ বাড়ানো যাবে না যাতে শিশুরা জীবনের শুরু থেকেই পড়ার প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে না ফেলে। সেই সঙ্গে দেখতে হবে যাতে তারা যথেষ্ট পরিমাণে আনন্দ, উৎসাহ, খেলাধুলা এবং উপযুক্ত সময় পর্যন্ত বাড়িতে ঘুমোনোর সময় পায়। নরম মনের বিকাশ ঘটাতে এই সব দিকে গুরুত্ব দিতেই হবে। কারণ এগুলি শিশুদের অধিকার। দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের প্রতি এমন মনোভাব দেখানোর পাশাপাশি আদালত এমনও বলেছে যে শুধু দ্বিতীয় শ্রেণি নয়, সারা দেশে তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে কেবল ভাষা, পরিবেশ, বিজ্ঞান ও অঙ্ক-র বাইরে অকারণে বইখাতা, নোটবুকের বোঝা বাড়ানো যাবে না। কেন্দ্রীয় সরকারের ২০০৬ সালে নেওয়া ‘দ্য চিলড্রেন স্কুল ব্যাগস (লিমিটেশন অন ওয়েট) বিল’ ও গাইড লাইন মেনে দেশের সব স্কুলকে চলতে হবে।