বিশ্ব সংগীত ও যোগ দিবস

279
0
International Yoga Day & World Music Day

পৃথিবীর প্রথম গান কী? কেউ-কেউ মজা করে বলেন কান্না, কেউ-কেউ বলেন পাখির শিস। এ নিয়ে অনন্ত প্রশ্নের মধ্যেই একদিন গান এসেছিল পৃথিবীতে।

প্রাচীন গুহাচিত্রে সংগীত তালবাদ্যের ছবি মিলেছে। তিব্বতের তংকায়ও নানা নিদর্শন মেলে।

ঋগ্বেদ থেকে শুরু করে পৃথিবীর বহু দেশে বহুপ্রাচীন পুঁথিতে সংগীতের বর্ণনা। ফোক বা লোক সংগীত থেকে লঘু সংগীতের এক বৃহৎ কাল।

দিনে-দিনে দেশে-দেশে সংগীত বদলেছে তার ভাষা, তার অবয়ব। সংগীত ও নৃত্যকলা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন রীতিতে প্রতীয়মান হয়েছে বা হয়ে চলেছে।

আর এই সংগীতকে নিয়ে মানুষের উন্মাদনার অন্ত নেই। শুধু উন্মাদনা কেন শোকও সংগীতের উদ্ভাবনের অঙ্গ।

পৃথিবীর বহু সংগীত, সুর সৃষ্টি হয়েছে শোক থেকে।

শোক ও সুখ এই দুইই বিদ্যমান সংগীতে। মানুষের আবেগ-অনুভূতির অনন্যমাধ্যম সংগীত। তা সে লোক সংগীত হোক,বা উচ্চাঙ্গরীতির সংগীত।

এক কথায় তান লয় সুর ধ্বনির সমন্বয়েই সৃষ্টি হয় সংগীতের, আর তাকে মাধুরী দিতে যেমন শিল্পীর কণ্ঠে লাগে, তেমন‌ই কালে-কালে তাকে সাহায্য

বা সংগত করতে তৈরি হয়েছে নানা বাদ্য পিয়ানো, গিটার, ঢাক-ঢোল-খোল-তবলা জাতীয়, বাঁশি ইত্যাদি।

এই সংগীতকে নিয়েই এক উচ্ছ্বাশ ও উন্মাদনার মধ্যেই একদিন এর সংগীত দিবসের ভাবনা।

যেদিন বিশ্বের নানাপ্রান্তের সংগীতপ্রেমী মানুষ এই দিনটিকে সংগীত দিবস হিসেবে পালন করবেন। সেই দিনটি হল ২১ জুন।

১৯৮০ সাল থেকে গোটা বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ এই দিনটিকে সংগীত দিবস হিসেবে পালন করে চলেছেন।

বর্তমানে বিশ্বের ১২০টিরও বেশি দেশ এই দিনটিকে মহাসমারোহে পালন করে থাকে।

সংগীত শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ Mousike থেকে। ইউরোপে ২১ জুন বিশেষ ছুটির দিন বা সামার ডের সূচনা হিসেবে সমস্ত মানুষ উৎসবে মেতে ওঠেন।

তেমন‌ই এক সময়ে ১৯৭০ সালে আমেরিকান স্ংগীতজ্ঞ জোহেল কোহেন (Johel Cohen) দলবল নিয়ে পথে-প্রান্তরে গানবাজনা নিয়ে দর্শক-শ্রোতাদের মন জয় করতে শুরু করেন।

দেখাদেখি সমস্ত নামী-অনামী সংগীত শিল্পীরাই অংশগ্রহণ করেন ও দর্শকরা গান শুনতে ভিড় করেন।

সেই দেখাদেখি ফ্রান্সের পথে-পথে দর্শকদের মনোরঞ্জনের মাধ্যমে শুরু হল ফেস্টিভ্যাল অব মিউজিক।

নানা দেশের শিল্পীদের অংশগ্রহণে জমজমাট হয়ে উঠল সেই উৎসব। অবশেষে ১৯৮২ সালে সর্বসম্মতভাবে ফরাসি সরকার প্রথম মিউজিক ডে হিসাবে স্বীকৃতি দিল।

দিন-দিন প্রবল উৎসাহের কারণেই পরবর্তী কালে ইউরোপীয় দেশগুলি এই সংগীত দিবসের আয়োজন করে ও ইউরোপের বাইরের দেশগুলির নামি-অনামী শিল্পীরা অংশগ্রহণ করেন।

এমনকি স্থানীয় হোটেল-রেস্তোরাঁগুলিতেও সংগীতের আয়োজন করে।

ব্রিটিশ ওয়ার্লড মিউজিক ম্যাগাজিন ‘সংলাইনস’  (Songlines) মিউজিক অ্যাওয়ার্ড চালু করে ২০০৯ সাল থেকে।

তার আগে ১৯৯৯  সালে চালু হয় ‘ওমেক্স’ অ্যাওয়ার্ড Wimanda ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে।

বর্তমানে বাংলাদেশ, বেলজিয়াম, ভারত, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, আইসল্যান্ডের মতো দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে এই সংগীত উৎসবের ঢেউ।

২১ জুন সংযোজিত হয়েছে বিশ্ব যোগ দিবসও। ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী এই দিনটিকে বিশ্ব যোগ দিবস হিসাবে ঘোষণা করেন এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘও এই দিনটিকে বিশ্ব যোগ দিবস রূপে ঘোষণা করেন।