অন্য গ্রহে মানুষের বসতি স্থাপন

32
0
Sunita Williams

এই মুহূর্তে বিশ্বের সাড়া ফেলা একটা ছবি আমরা প্রায়ই বিভিন্ন সংবাদে ভেসে উঠতে দেখছি।

দেখছি এক সাহসিনী মহাকাশ যাত্রী কেমন ভাবে মহাকাশে আটকে পড়ে দিন কাটাচ্ছেন। তার মর্মান্তিক সংবাদ। পাওয়া যাচ্ছে তাঁর সহযাত্রীর কথাও।

এই সাড়া জাগানো মহিলার নাম সুনীতা উইলিয়ামস। আর এই সুনীতা উইলিয়ামসই দেখিয়ে দিয়েছেন সাহস এবং দুর্জয় পণ থাকলে কোন অবধি পৌঁছনো যায়।

সুনীতা উইলিয়ামস একটা রকেটে চড়ে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছেন কয়েক মাস আগে ফিরে আসার কথা ছিল অনেক আগে কিন্তু সেই রকেটের যন্ত্রে বিঘ্নের কারণে তাঁর ফিরে আসা আটকে রয়েছে।

কিন্তু তবু থেমে নেই মহাকাশে পাড়ি দেবার পরিকল্পনা। রকেট বিশ্বে নিরাপদে মাটিতে নামিয়ে ইতিহাস গড়েছে ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স।

এর মাধ্যমে মানুষের মহাকাশ যাত্রার প্রতি যেমন ক্রমশ আগ্রহ বাড়ছে, তেমনি দিন দিন বিশ্বের কাছে উন্মোচিত হচ্ছে এক নতুন বিশ্ব।

ইলন মাক্সকের পথ ধরেই উঠে এসেছে নতুন প্রতিযোগী কোম্পানি।

আধুনিকপ্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিতে এবার মাঠে নেমেছে ইউরোপের মহাকাশযান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান দ্য এক্সপ্লোরেশন কোম্পানি (টিইসি)।

মহাকাশে যাত্রী ও কার্গো পরিবহনের জন্য পুনর্ব্যবহারযোগ্য ক্যাপসুল তৈরির লক্ষ্যে ১৬ কোটি ডলার তহবিল সংগ্রহ করেছে কোম্পানিটি।

টিইসি মূলত ‘নিক্স’ নামের পুনর্ব্যবহারযোগ্য একটি ক্যাপসুল তৈরি করবে, যার মাধ্যমে মহাকাশে নভোচারী ও কার্গো পরিবহণ করা হবে।

দিন দিনমহাকাশে যাওয়া এখন খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অনেক দেশ মহাকাশে তাদের নিজস্ব মহাকাশচারী ও মহাকাশ স্টেশনে জিনিসপত্র পাঠাতে চায়।

এ কাজ করার জন্য অনেক কোম্পানি প্রতিযোগিতা শুরু করে দিয়েছে। টিইসিও এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।

দেশে দেশে উৎসাহ বাড়ছে। চীন, রাশিয়া-সহ বিভিন্ন দেশ তাদের মহাকাশ কর্মসূচিতে প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করছে এবং অনেক এগিয়ে চলেছে।

তবে নতুনত্ব ও বাণিজ্যিক সাফল্যের ক্ষেত্রে স্পেসএক্স এখনও পর্যন্ত দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

ইতিমধ্যে ইলন মাস্কের স্পেসএক্স তার উদ্ভাবনী প্রযুক্তির মাধ্যমে মহাকাশ শিল্পে প্রধান শক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

তৈরি হয়েছে ‘ড্রাগন’ নামে কোম্পানিটির একটি ক্যাপসুল। যা মহাকাশে মানুষ ও কার্গো পরিবহণে সক্ষম।

ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের স্টারশিপ রকেটের একটি অংশ এই প্রথমবার লঞ্চ প্যাডে ফিরে এসেছে।

যা বিশ্বে এবারই প্রথম। এরই মধ্য দিয়ে ইতিহাস গড়ল মাস্কের মহাকাশ যান স্পেসএক্স।

পাঁচবারের প্রচেষ্টায় সফল হয়েছে এ যাবৎকালের সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট স্টারশিপের দুটি অংশ।

একটি হচ্ছে ‘সুপার হেভি বুস্টার’ নামের তরল গ্যাসের জ্বালানিচালিত রকেট। আর অপর অংশটি হল ‘স্টারশিপ’ নামের মহাকাশযান – যা এই সুপার হেভি বুস্টারের ওপর বসানো আছে।

স্টারশিপ রকেট ১০০ টনের বেশি যন্ত্রপাতি বা ১০০ জন আরোহী বহন করতে পারে।

আর সুপার হেভি বুস্টারে আছে ৩৩টি ইঞ্জিন, যা মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার আর্টিমেস রকেটের চেয়ে দ্বিগুণ শক্তিশালী।

এক সময় মহাকাশে কোনো রকেট পাঠানো হলে রীতিমতো আলোড়ন তৈরি হত।

অথচ বর্তমানে মহাকাশে রকেট পাঠানো নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারে রূপ নিয়েছে। এর পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে ইলন মাস্কের কোম্পানি স্পেসএক্স।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ‘কেপ ক্যানাভেরাল স্পেস সেন্টার’ থেকে উৎক্ষেপিত হয়েছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএক্সের ফ্যালকন ৯ রকেট, যেটি ২০২৩ সালে নির্ধারিত ৯৬টি রকেট মহাকাশে উৎক্ষেপণের মাইলফলক পেরিয়ে গেছে।

ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি বা ইএসএ’র ‘হেরা’ মিশনটি সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে ফ্যালকন ৯ রকেটে চড়ে যাত্রা শুরু করে; যেটি হতে চলেছে এক ভিন্ন ধরনের গ্রহাণু মিশন।

এছাড়া ইলন মাস্ক কিছুদিন আগেই জানিয়েছিলেন, বছরে ১২০ বার স্টারশিপ রকেট উৎক্ষেপণ করতে চায় তার প্রতিষ্ঠান।