আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক বড় সংখ্যক শূন্যপদের চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হতে চলেছে। যার মধ্যে অন্যতম হল রেলওয়ে এনটিপিসি ও অন্যান্য পদে নিয়োগ, যেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী নতুন ১০% সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে। অথচ এই সংরক্ষণের যোগ্য প্রার্থীদের হাতে এখনও পর্যন্ত কোনো বৈধ সার্টিফিকেট নেই, ফলত সরকার প্রসূত এই নতুন সংরক্ষণের সুবিধা সামনের পরীক্ষাগুলিতে আদৌ কতটা পাবেন, সে ব্যাপারে চিন্তায় রয়েছে পরীক্ষার্থীমহল।
প্রসঙ্গত, গত ১২ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির সম্মতিক্রমে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থা ও সরকারি চাকরি ক্ষেত্রে ১০% অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া জেনারেল শ্রেণির প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষণ চালু হয়। গত ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯ কেন্দ্রীয় সরকারের পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিং ডিপার্টমেন্ট একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই নতুন কোটা সংক্রান্ত স্মারকলিপি প্রকাশ করেছে। মুশকিল হচ্ছে, এই নতুন আইনকে প্রত্যেক রাজ্য সরকারেরও গ্রহণ করে, বলবৎ করার ব্যবস্থা করতে হবে। যার এখনো পর্যন্ত কোনো বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়নি।
১০% এই নতুন কোটার জন্য সার্টিফিকেটটিকে বলা হচ্ছে ‘ইনকাম অ্যান্ড অ্যাসেট সার্টিফিকেট’। এই সার্টিফিকেটের নমুনা কেন্দ্রীয় সরকারের পার্সোনেল ডিপার্টমেন্টের স্মারকলিপিতে ‘অ্যানেক্সচার -১’ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর এই মেমোরেন্ডাম সংক্রান্ত চিঠি কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রতিটি রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে যাওয়ার কথা, সেখান থেকে সেটা পাঠানো হবে রাজ্য অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দপ্তরের কাছে। আবেদন গ্রহণ থেকে শুরু করে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন এবং সার্টিফিকেট প্রদানের পুরো কাজটিই এই দপ্তরের মাধ্যমে হয়ে থাকে। অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দপ্তর আবার সমস্ত এসডিও ও পঞ্চায়েত অফিসের সহায়তায় এই কাজ সম্পন্ন করে থাকে। রাজ্য অনগ্রসর কল্যাণ দপ্তরের ই-মেল আইডি- help.ccwb@gmail.com।
এই নতুন কোটার সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে দুটি বিষয় রয়েছে— এক, প্রার্থীর ফ্যামিলি ইনকাম সংক্রান্ত ও দুই, তাঁর পারিবারিক সম্পত্তি বা জমি-বাড়ি সংক্রান্ত। তাই সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, একজন প্রার্থীকে সমস্ত কিছু ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন করে তার হাতে সার্টিফিকেটের কপি আসা পর্যন্ত সময়টাও নেহাত কম লাগবে না। এখানেই আশঙ্কা সরকারি পরীক্ষার্থী মহলে। লোকসভা ভোট সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারির আগেই কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য সরকারের একাধিক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়ে যাওয়ার কথা। তাই এটা পরিষ্কার, আগামী দু সপ্তাহের মধ্যেই এই বিজ্ঞপ্তিগুলি প্রকাশ হয়ে যাবে, ততদিনে এই সার্টিফিকেটের প্রক্রিয়া আদৌ শুরু হবে কিনা সে বিষয়েই ধন্দে রয়েছেন পরীক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, এই বিষয়টি যেহেতু একাধিক রাজ্যের (গুজরাট, ঝাড়খণ্ড, হরিয়াণা, রাজস্থান ও বিহার ইতিমধ্যে ব্যবস্থা শুরু করেছে) সম্যসার জায়গায় এসেছে, সে কারণে আসন্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলিতে উক্ত সংরক্ষণের সার্টিফিকেট বিষয় নিয়ে শর্ত ভিত্তিক ছাড় দেওয়া হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
ইকোনোমিক্যালি উইকার ক্লাস সংরক্ষণের যোগ্যতা—
এসসি/এসটি/ওবিসি-র সংরক্ষণের আওতায় নেই এমন শ্রেণির প্রার্থীরা, যাঁদের পারিবারিক আয় বার্ষিক ৮ লক্ষের কম। তবে—
১) ৫ একর বা তার বেশি কৃষি জমি থাকলে চলবে না।
২) ১০০০ বর্গ ফুট বা তার বেশি মাপের ফ্ল্যাট থাকলে চলবে না।
৩) মিউনিসিপ্যালিটি এলাকায় ১০০ বর্গ গজ বা তার বেশি জায়গা জুড়ে আবাসিক প্লট থাকলে চলবে না।
৪) মিউনিসিপ্যালিটি এলাকার বাইরে ২০০ বর্গ গজ বা তার বেশি জায়গা জুড়ে আবাসিক প্লট থাকলে চলবে না। প্রার্থীর পরিবারের অন্য শহর, রাজ্য এই ধরনের সম্পত্তি থাকলে সেটাও হিসাবের মধ্যে ধরা হবে।
Govt Exam, EWS Certificate, EWS Qouta, 10% Reservation Quota Certificate