রেজাল্ট বেরোল, তৈরি হোন পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য

schedule
2018-08-23 | 09:18h
update
2018-08-23 | 09:18h
person
জীবিকা দিশারী
domain
জীবিকা দিশারী

অশোক চক্রবর্তী

রাজ্য গ্রুপ-ডি পর্ষদের চূড়ান্ত ফল বেরোল, এরকমই আরও নানা পরীক্ষার ফল বেরিয়েছে ও বেরোচ্ছে। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার ফল বেরনোর পর নিয়োগপ্রক্রিয়ায় পর্ষদগুলির আর হাত থাকে না। রেল, ব্যাঙ্ক, বিমা সংস্থা ইত্যাদির ক্ষেত্রেও তাই। নিয়োগ পর্ষদ/আয়োগ আবেদনপত্র থেকে শুরু করে ফলাফলের মেধাতালিকা প্রকাশ পর্যন্ত কাগজপত্র পাঠিয়ে দেয় সংশ্লিষ্ট নিয়োগকারী দপ্তরে, নিয়োগের সুপারিশ সহ। তারপর সেই দপ্তর বা দপ্তরগুলি প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন, প্রয়োজনে ডাক্তারি পরীক্ষাও করিয়ে, সন্তুষ্ট হলে নিয়োগপত্র দেয়।

কেন্দ্রীয় চাকরিতে ভেরিফিকেশনের আগেই নিয়োগপত্র দেওয়ার ভাবনা: কেন্দ্রীয় সরকার অবশ্য নতুন ভাবনাচিন্তা করছে তাদের চাকরিতে পুলিশ ভেরিফিকেশনের আগেই নিয়োগ দেওয়া যায় কিনা সে ব্যাপারে। সেক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন চলতে থাকবে, কিন্তু তার রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা না করে নিয়োগ দেওয়া হবে প্রার্থীর কাছ থেকে হলফনামা নিয়ে। তাতে অন্যান্য শর্তের মধ্যে থাকবে, পুলিশ ভেরিফিকেশনে প্রতিকূল রিপোর্ট এলে তাঁর বিরুদ্ধে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে, নিজে হলফনামা বা ভেরফিকেশন ফর্ম ইত্যাদিতে ভুল তথ্য দিয়ে থাকলে তার শাস্তি এমনকি ফৌজদারি শাস্তির ব্যবস্থাও হতে পারে— এসব হলে তিনি তা মেনে নিতে বাধ্য থাকবেন।

যাইহোক, এই পরিবর্তন এখনও ভাবনাচিন্তার স্তরে আছে, এখনও পুলিশ ভেরিফিকেশনের রিপোর্ট এলে তবেই নিয়োগের প্রশ্ন। রাজ্যস্তরে তো নিয়ম বদলের কথাই ওঠেনি। পুলিশ ভেরিফিকেশন থাকছে, থাকবে।

Advertisement

কী পদ্ধতি, কী-কী দেখে পুলিশ: নিয়োগ কর্তৃপক্ষ ভেরিফিকেশন লেটার পাঠান সংশ্লিষ্ট জেলাশাসককে, জেলাশাসক পাঠান জেলার পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেন্টকে, এসপি পাঠান স্থানীয় থানায়। থানা খোঁজ নেবে প্রার্থীর নানা তথ্য, তাঁর চরিত্র, ফৌজদারি অপরাধের ঘটনা আছে কিনা ইত্যাদি। প্রার্থীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অ্যাটেস্টেশন ফর্ম দেখে তাঁর প্রার্থিত পদের নাম, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, বাবা-মা-স্ত্রী/স্বামীর নাগরিকত্ব, স্ত্রী/স্বামীর জন্মস্থান, প্রার্থীর জাতীয়তা (নাগরিকত্ব), জন্মস্থান (রাজ্য, জেলা সহ), এখন কোন রাজ্যে কোন জেলায় থাকেন, জন্মতারিখ, বয়স, মাধ্যমিক পাশের সময় বয়স, আদিবাস পাকিস্তান বা বাংলাদেশে হলে সেখানকার পুরো ঠিকানা ও কবে ভারতের অভিবাসী হন, পড়াশোনার স্কুল-কলেজের ঠিকানা ও সময়কাল, গত ৫ বছরের মধ্যে ১ বছরের বেশি কোথাও বসবাস করেছেন কিনা, কর্মরত হলে পদ ও অফিসের ঠিকানা ইত্যাদি সূত্রে অন্যান্য যেসব জায়গার উল্লেখ আছে সেইসব ঠিকানা, প্রার্থীর পেশা, ধর্ম, তপশিলি ইত্যাদি কিনা, বিবাহিত/অবিবাহিত, শনাক্ত করার মতো কোনো শারীরিক চিহ্ন, আদালতে কোনো ফৌজদারি অপরাধের জন্য বিচার বা দণ্ড হয়েছে কিনা (হলে তার পুরো বিবরণ), আদালত বা কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান/বিশ্ববিদ্যালয়/ট্রেনিং সংস্থার কোনো মামলা তাঁর বিরুদ্ধে ঝুলে আছে কিনা, আদালত (ট্র্যাফিক পুলিশ নয়) কখনও জরিমানা করেছে কিনা, কখনো আদালতের নির্দেশে গ্রেপ্তার হয়েছেন কিনা, বা আদালতে পুলিশ চার্জগঠন করেছে কিনা, হলে তার বিবরণ, স্কুল-কলেজ থেকে কখনও বিতাড়িত হয়েছেন কিনা, আগে কখনও সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অনুরূপ শাস্তি হয়েছে কিনা, কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা থেকে সাময়িক ভাবে বা বরাবরের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন কিনা, স্ত্রী/স্বামী জীবিত থাকতে বিবাহবিচ্ছেদ ছাড়াই একাধিক বিয়ে করেছেন কিনা, অ্যাটেস্টেশন ফর্মে প্রার্থীকে চেনেন এমন যে দুজন স্থানীয় ব্যক্তি বা দুজন দায়িত্ববান ব্যক্তির রেফারেন্স প্রার্থী দিয়েছেন তাঁদের যথার্থ্ অবস্থান— কম-বেশি এরকম বিভিন্ন তথ্য যাচাই করবে স্থানীয় থানা।

কতদিন লাগে, পূর্বপ্রস্তুতি কীভাবে নেওয়া যায়: এই কাজে মোটামুটি ২ থেকে ৬ মাস সময় লাগে। যত বেশি জায়গার তথ্য যাচাই করতে হবে সেইমতো সময়ের বেশ-কম হয়ে থাকে। সাধারণ মানুষের চিন্তার কোনোই কারণ নেই। সব প্রাসঙ্গিক প্রমাণপত্রাদি হাতের কাছে মজুদ রাখা দরকার। কখনও গ্রেপ্তার হলেই বা অভিযুক্ত হলেই বা এফআইআর হলেই যে কালো তালিকাভুক্ত হলেন বা চাকরির সুযোগ গেল এমন নয়। কিন্তু কোনো ক্ষেত্রেই ঘুষ দেবার পথে যাবেন না, কারণ ঘুষ চাওয়া মানেই আপনার দিক দিয়ে সামান্য প্রকরণগত ত্রুটি থাকতে পারে মাত্র যা মেরামত করা যায় এবং যে-ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট অফিসারই সাহায্য করবেন আশা করা যায়, আপনি না বললেও। আর, সত্যিই যদি বাতিলযোগ্য হন কোনো জঘন্য অপরাধমূলক কাজের ফলে, তাহলে সংশ্লিষ্ট আদালত/বিশ্ববিদ্যালয়/প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাপর্ষদ ইত্যাদির সেই রেকর্ড কাউকে কোনো ঘুষ দিয়েই মুছবে না। সাধারণ মানুষের জীবনে এরকম কিছু ঘটবার কথা নয়। মনে কোনো বিষয়ে সংশয় ঘটলে বরং কোনো আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করে আগাম পরামর্শ নিয়ে রাখতে পারেন।

Advertisement

Imprint
Responsible for the content:
jibikadishari.co.in
Privacy & Terms of Use:
jibikadishari.co.in
Mobile website via:
WordPress AMP Plugin
Last AMPHTML update:
22.04.2024 - 07:21:31
Privacy-Data & cookie usage: