বালামনি আম্মা, মালয়ালম ভাষার `গ্র্যান্ডমাদার’

1826
0

পুরো নাম নালাপত বালামনি আম্মা। ভারতীয় মালয়ালম ভাষার অন্যতম কবি। তাঁকে মালয়ালাম সাহিত্যের `গ্র্যান্ডমাদার’ বলা হয়।

কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও তাঁর সৃষ্টিশীল সাহিত্য রচনার গুণেই তিনি পেয়েছিলেন সরস্বতী সম্মান, সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার, মালয়ালম ভাষায় এজুথাচান পুরস্কার সহ আরও অনেক সম্মান।

জন্ম কেরালার ত্রিশূরে ১৯০৯ সালের ১৯ জুলাই। বালামনি আম্মার মামা নারায়ন মেনন ছিলেন মালয়ালম ভাষার সুপরিচিত কবি।

তাঁর কাছ থেকেই বালামনি অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন লেখার। আম্মা (মা), মুথাসি (ঠাকুমা) এবং মাঝুভিন্টে কথা (কুড়ালের কথা) প্রভৃতি গল্প তাঁকে পরিচিতি এনে দেয় সেই সময়।

বিবাহসূত্রে  সহযোগী হিসেবে পেয়েছিলেন স্বামী আন্না ভি এম নায়ারকে। ডি এম নায়ার ছিলেন বহুল প্রচারিত মালয়ালম ভাষায় প্রকাশিত মাতৃভূমি পত্রিকার পরিচালক এবং ব্যবস্থাপনা সম্পাদক।

সেই সুবাদেও বালামনি বেশ কিছু লেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। যদিও পরবর্তীকালে ভি এম কলকাতায় চলে আসেন। বালামনিও কলকাতায় চলে এসেছিলেন।  ভি এম নায়ার ১৯৭৭ সালে মারা যান।

বালামনি আম্মা ২০টিরও বেশি কবিতার সংকলন, বেশ কয়েকটি গদ্য রচনা এবং অনুবাদ প্রকাশ করেছিলেন। তার প্রথম কবিতা কুপ্পুকাই (“Kooppukai”) প্রকাশিত হয় ১৯৩০ সালে।

তাঁর প্রথম স্বীকৃতি আসে যখন তিনি কোচিন রাজ্যের প্রাক্তন শাসক পরীক্ষিত থামপুরানের কাছ থেকে সাহিত্য নিপুনা পুরস্কার লাভ করেন। `নিবেদম’ হল ১৯৫৯ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত বালামনি আম্মার কবিতার সংকলন।

তার কবিতা তাকে মালয়ালম কবিতার আম্মা (মা) এবং মুথাসি (দাদী) উপাধি দিয়েছিল। কেরালা সাহিত্য আকাদেমিতে বালামনিয়াম্মা স্মারক বক্তৃতা দেওয়ার সময়,

আক্কিথাম অচুথান নাম্বুথিরি তাকে “মানব গৌরবের ভাববাদী” হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে তার কবিতা তার কাছে একটি অনুপ্রেরণা ছিল।

তিনি মুথাসির জন্য কেরালা সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার (১৯৬৩), মুথাসির জন্য কেন্দ্রীয় সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার (১৯৬৫), আসান পুরস্কার (১৯৮৯), ভাল্লাথল পুরস্কার (১৯৯৩),

ললিথাম্বিকা অন্তরজানাম পুরস্কার (১৯৯৩), সহ অনেক সাহিত্য সম্মান ও পুরস্কার পেয়েছেন। নিবেদ্যম (১৯৯৫), এজুথাচান অ্যাওয়ার্ড (১৯৯৫), এবং এন.ভি. কৃষ্ণ ওয়ারিয়ার অ্যাওয়ার্ড (১৯৯৭) এর জন্য সম্মান।

এছাড়াও তিনি ১৯৮৭ সালে ভারত সরকার তৃতীয় সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান `পদ্মভূষণ’ সম্মানে ভূষিত কমে।

এখানেই বলার, আম্মা ছিলেন কমলা সুরাইয়ার মা (যিনি কমলা দাস নামেও পরিচিত ছিলেন)। এই কমলা দাশ ১৯৮৪ সালে তাঁর সাহিত্য সৃষ্টির কারণে নোবেল পুরস্কারের জন্য নমিনেটেড হয়েছিলেন।

এক সময় কমলা তাঁর মায়ের একটি কবিত `দ্য পেন’ অনুবাদ করেছিলেন, যা একজন মায়ের একাকিত্বের বর্ণনা। আম্মা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৪ সালে মারা যান। শেষ পাঁচ বছর আ্যালঝাইমার রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

মালয়ালম ভাষার এই বিশিষ্ট মহিলা কবিকেই গুগল ডুডল মঙ্গলবার ১৯ জুলাই ২০২২ তাঁর ১১৩তম জন্মদিনে সম্মান জানাল।