আঙুলের ভাষার জনক

schedule
2018-11-26 | 12:50h
update
2018-11-26 | 12:50h
person
জীবিকা দিশারী
domain
জীবিকা দিশারী

ধর্মযাজক থেকে আইনি পেশা কোনো কিছুতেই মন বসাতে পারলেন না এই মানুষটি। মন গিয়ে বসল এক অদ্ভুত শিক্ষার পাঠশালায়। যা বিশ্ব দরবরে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করল যেন।সরা বিশ্বের কাছে এক নতুন ভাষা নিয়ে এলেন এই মানুষটি যাকে আমরা বলতে পারি ফিংগার স্পেল আঙুলের ভাষা। আঙুলের ডগায় এত ভাষা লেখা আছে তা আগে বোধহয় কারও জানা ছিল না। ফরাসি এই মানুষটিই সেই হাতের দশটি আঙুলকেই বোবা ঠোঁঠে ভাষা জোগালেন।নির্বাক মুখে উঠে এল ভাবপ্রকাশের ভাষা। যা থেকে সমগোত্রীয় মানুষদের একে অপরের ভাষা বুঝতে একটুও অসুবিধে হবে না।মানুষটির নাম শার্ল মিশেল দ্য লেপে। জন্ম ১৮১২ সালের ২৪ নভেম্বর। প্যারিসে। ফরাসি বিপ্লবের দেশ। এই ধর্মযাজক একদিন প্যারিসের এক বস্তিতে গিয়ে দেখলেন দুই বোন অনুচ্চারিত চোখে বিহ্বল হয়ে তাকিয়ে রয়েছে তাঁর দিকে। তারা কথা বলতে পারে না। এই দৃশ্যই তাকে নতুন ভাষার জন্ম দেবার প্রেরণা দিল। খাওয়া ঘুম ছেড়ে স্থির করলেন কী করে ভাষাহীনদের উপযোগী ভাষা তৈরি করা যায়। তিনি স্থির করলেন আঙুলের ডগায় ফরাসি শব্দগুলিকে চেনানোর মধ্য দিয়েই বানান করে দেখানোর একটি ব্যবস্থা উদ্ভাবন করলেন। এই আঙুলের নাড়াচাড়ায় বা ভঙ্গিমায় শধু একক বর্ণ নয়, অনেক সামগ্রিক ধারণাও সহজ ইশারার মাধ্যমে শেখানোর কৌশল তৈরি করলেন। তাঁর এই প্রয়াস বা পদ্ধতিটিই পরবর্তীতে সারা বিশ্বে এক অনন্য স্বীকৃতি আদায় করে নিয়েছে।তাঁর আঙুলের ভাষার হাত ধরেই ফরাসি ইশারা ভাষার জন্ম। যে ভাষা আজও ফ্রান্সে ব্যবহৃত।শুধু ফ্রান্সে নয় সারা বিশ্বে ক্রমশ আরও বৈজ্ঞানিক ও কার্যকরী হয়ে লক্ষ লক্ষ বধিরদের মনের ভাব আদান-প্রদান করে চলেছে। হাসি কান্নার দ্যোতক হয়ে উঠেছে এই আঙুল ভাষা।শব্দ নয় ইশারাতেই হাসি দুঃখ ফুটে ওঠে ওদের চোখে মুখে।এই ফরাসি ইশারাই পরবর্তী কালে জাপান, আমেরিকা, চিন সহ বিশ্বের নানা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে নিজেদের মতো ভাষার ভাবের আদান প্রদানে। দেশে দেশে নিজস্ব ভাষায় গড়ে  উঠেছে ডেফ অ্যান্ড ডাম স্কুল। শার্ল মিশেল নিজেও একটা স্কুল খুলে ছিলেন।যা বিশ্বের প্রথম বধিরদের স্কুল বলেই পরিচিত।ফ্রান্সের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি এই ভাষাকে বেনেফেকটরি অফ হিউম্যানিটি আখ্যায় ভূষিত করেছিল। খুলে ছিলেন বধিরদের শিক্ষার জন্য টিচার্স ট্রেনিং স্কুলও। সেই ডেফ এডুকেশন ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। আজ বিশ্বের লক্ষ লক্ষ বধির মানুষ তাঁর শেখানো আঙুলের ভাষাতেই মনের ভাব প্রকাশ করার কৌশল  রপ্ত করেছেন। এইখান থেকেই কি মাইম বা মূকাভিনয়ের জন্ম সে অন্য ইতিহাস। বর্তমানে ইন্টারনেটের যুগে এই ভাষা শেখার সুযোগ তো রয়েছেই আমেরিকা গ্রেট ব্রিটেন এর মতো দেশে প্রতিনিয়ত গবেষণা ও চর্চা চলেছে।

Advertisement

 

Advertisement

Imprint
Responsible for the content:
jibikadishari.co.in
Privacy & Terms of Use:
jibikadishari.co.in
Mobile website via:
WordPress AMP Plugin
Last AMPHTML update:
13.04.2024 - 07:26:32
Privacy-Data & cookie usage: