গো টু গ্লাসগো : পরীক্ষার্থীদের জন্য COP 26 সম্মেলন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

746
0
Climate Change Conference

পরিবেশ সচেতনবাদীদের হাতে নানান প্রতিবাদী ভাষা, সচেতন বার্তার সোচ্চার অঙ্গীকার `মেক দ্য ওয়ার্ল্ড গ্রিন এগেন’। কারও হাতে লেখা `গো টু গ্লাসগো’।

এই গ্লাসগোতেই রাষ্ট্রসংঘের জলবায়ু শীর্ষক  কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজ বা কনভেনশন অব ক্লাইমেট চেঞ্জ (Cop26) শুরু হয়েছে। ৩১ অক্টোবর থেকে। চলবে আগামী ১২ নভেম্বর পর্যন্ত।

আর্জেন্টিনা, ভারত, ফ্রান্স, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ঘানা সহ বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের প্রতিনিধিরা আলোচনা করবেন।

মুখ্যত বিশ্বের পরিবেশ নিয়ে। বিশ্বের উষ্ণায়নকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বেঁধে রাখা এবং সম্ভব হলে তা ১.৫০ সেলসিয়াসে নামিয়ে আনা।

এই বার্তা দিতেই `কপ ২৬’ এর গ্লাসগো পরিবেশ সম্মেলন। এই সম্মেলনে উপস্থিত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।

আগামী ২০৩০ সালকেই পাখির চোখ করা হয়েছে। আগামী এক দশকের মধ্যে এই কার্বন নির্গমন কমাতে না পারলে বিশ্বের সামনে ভয়ঙ্কর দিন আসছে।

শক্তিশালী সহ সমস্ত দেশকেই এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে সেই বার্তা দেওয়াই রাষ্ট্রপুঞ্জের এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য।

একদিকে কার্বন নির্গমনকে কোন স্তরে নামিয়ে আনা যায় সেই নিয়ে আলোচনা হবে যেমন অন্যদিকে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তাতে বলা হয়েছে ২০১৫-২১ পর পর সাত বছর বিশ্বের ইতিহাসে উষ্ণতম বছর চলছে।

২০২১ সালের প্রথম ৯ মাসেই এই উষ্ণতা বেডেড়ছে ১.০৯ ডিগ্রি। একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা বৃদ্ধি এক `অকল্পনীয়’ অবস্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর মানুষকে। আশঙ্কার প্রহর গুনছে বিশ্ব প্রকৃতি। বন্যা, ধস, মরুভূমির গ্রাস, অস্বাভাবিক বৃষ্টি, ঘন ঘন বজ্রপাত প্রাকৃতিক পরিবর্তন তারই নিদর্শন।

উল্লেখ্য, গত এক দশক ধরেই পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি দূষিত কার্বন ডাইঅক্সাইড জোগায় চিন। সে দেশে রয়েছে হাজার খানেক তাপবিদ্যুত্‌ কেন্দ্র।

বিশ্বের বিভিন্ন তাপ নিঃসরণকারী দেশকেই কার্বন কমানোরই প্রধান বার্তা দেবে এই সম্মেলন। উল্লেখ্য, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে বর্তমানে কার্বন ডাই অক্সাইডের ঘনত্ব বর্তমানে প্রতি মিলিয়নে প্রায় ৪১২ শতাংশ বাড়ছে।

২০০০ সাল থেকে ১১ শতাংশ হারে কার্বনের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে পরিবেশে। যা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে আগামী দিনে। গবেষণায় বলছে, বিশ্বের জনসংখ্যার ৯৫ শতাংশেরও বেশি মানুষ দূষিত বাতাসে শ্বাস নেয়। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা আফ্রিকা ও এশিয়ার বেশি কয়েকটি দেশ।

এমন অবস্থায় গ্রিন হাউস গ্যাস কমাতেই হবে। এমন সতর্ক বার্তা বিশ্বের সমস্ত পরিবেশ বিজ্ঞানীরা দিয়ে চলেছেন সব সময়।

এ বছর গ্লাসগো কী বার্তা দেয় সেটাই দেখার। এ বছর ২৬ তম আসর বসেছে ইউকে এবং ইতালির সংযুক্ত সহায়তায়। জলবায়ু নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের উদ্যোগে প্রথম সাড়া জাগানো সম্মেলন হয়েছিল বার্লিনে ১৯৯৫ সালে।

সেই থেকে প্রতি বছর কোথাও না কোথাও নিয়ম করে বসে রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিবেশ নিয়ে চিন্তা ভাবনা, আলোচনার আসর। ১৯৯৭ সালে জাপানের কিয়োটোয় ঐতিহাসিক প্রোটোকল তৈরি হয়।

দিন দিন বিশ্ব জলবায়ু পরিবেশ যত উত্তপ্ত ও উষ্ণায়ন ঘটছে ততই এই সব সম্মেলনের গুরুত্ব ও সতর্ক বার্তা প্রেরিত হচ্ছে। সেই সবের মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি।

যেখানে বিশ্বের ১৯২টি দেশের উচ্চস্তরের প্রতিনিধি উপস্থিত থেকে পৃথবীকে বাসযোগ্য করার অঙ্গীকার করা হয়েছিল।

এরই মাঝে আমরা ২০১৮ সালে দেখেছিলাম পনের বছর বয়সি সুইডিশ কন্যা গ্রেটা থুনবার্গের সোচ্চার প্রতিবাদের স্বর।

জার্মানির ফ্রাঙ্কুফুর্ট থেকে বিশ্বের ১৬০টি দেশের ২ হাজার ৬০টি শহরে পরিবেশ বাঁচানোর দাবিতে। পরিবেশ বাঁচানোর দাবিতে শিশুশিক্ষার্থীরাই ছিল মূলত প্রথম ভাগে।

সচেতন ও সতর্ক না হলে পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা, ভয়াবহতা এবং ধ্বংসের রূপ কেমন হতে পারে আগমী দিনে সে সব নিয়ে নানা সময়েই তৈরি হয়েছে সিনেমা। এখন দেখার আমরা কি সেই ভয়ঙ্কর ধ্বংসের দিকেই যাব না ` মেক দ্য ওয়ার্ল্ড গ্রিন এগেন’-এর দিকে যাব।