গুগল ডুডুল-এ সত্যেন্দ্রনাথ বসু

751
0

আপামর বাঙালির কাছে তিনি বিজ্ঞানাচার্য হিসেবেই স্বীকৃত। শুধু তাই নয়, বিশ্ববরেণ্য এই বিজ্ঞানসাধক কোয়ান্টাম স্ট্যাটিসটিক্সের উদ্ভাবক, পদার্থতত্ত্ববিদ ও বাংলা মাতৃভাষায় বিজ্ঞান চর্চার অন্যতম প্রবক্তা হিসেবেই চিহ্নিত।

শনিবার বিখ্যাত এই গণিতবিদ এবং পদার্থবিদ সত্যেন্দ্রনাথ বসুকেই পদার্থবিদ্যা এবং গণিতের ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য গুগল ডুডল-এ সম্মান জানাল।

১৯২৪ সালে সত্যেন্দ্রনাথ বসু জগতখ্যাত জার্মান বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের কাছে তাঁর কোয়ান্টাম ফর্মেশনগুলি পাঠিয়েছিলেন।

এবং আইনস্টাইন এইদিনে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের একটি উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। এই দিনটি বিজ্ঞানের ইতিহাসে তো বটেই বাংলা ও বাঙালির কাছেও এক উল্লেখযোগ্য স্মরণীয় দিন।

এই দিনটিকেই গুগল ডুডল-এ স্মরণ করা হল।

আদিনিবাস সুবর্ণপুর নদিয়ায় হলেও সত্যেন্দ্রনাথের জন্ম ১৯২৪ সালে কলকাতায়। শিশুকাল থেকেই ছিলেন মেধাবী।

১৯০৯ সালে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পঞ্চম এবং ১৯১১ সালেল আইএসসিতে প্রথম হয়ে উত্তীর্ণ হন। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যার রিডার হিসাবে যোগ দেন এবং ২৩ বছর এক নাগাডে  গবেষণায় নিযুক্ত ছিলেন।

সেখানেই পদার্থবিদ্যার মূল্যবান গবেষণা ও এক্সরে কৃস্টালোগ্রাফি সম্পর্কে গবেষণা করে বিজ্ঞান জগতে আলোড়ন তুলেছিলেন।

১৯২৪ সালে তাঁর `প্লাঙ্কতত্ত্ব ও কোয়ান্টাম প্রকল্প’ প্রবন্ধটি আইনস্টাইন নিজে পাঠ করেন এবং তা অনুবাদ করে সে সময়ের এক বিখ্যাত জার্নালে তা প্রকাশ করেন। তখনই তা `বোস-আইনস্টাইন’ সংজ্ঞা নামে সারা বিশ্বে সমাদৃত হয়।

শুধু বিজ্ঞানীই ছিলেন না, খুব ভালো বেহালা ও এসরাজ বাজাতেও পারতেন। এই বিজ্ঞানীর জীবন বিস্তৃত ঘটনা ও সম্মানে ভরা।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া বিশ্বভারতীরও উপাচার্য হয়েছিলেন। লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটি ফেলো নির্বাচিত হওয়া ছাড়াও নানা সময়ে নানা সম্মানে ভূষিত।

১৯৫২ খ্রিস্টাব্দ থেকে কিছুকাল রাজ্যসভার মনোনীত সদস্যও নির্বাচিত হয়েছিলেন। ভারত সরকারের `পদ্মবিভূষণ’ ও বিশ্বভারতীর `দেশিকোত্তম’ সম্মানেও ভূষিত।

মাতৃভাষা বাংলায় বিজ্ঞানশিক্ষার অন্যতম পথপ্রদর্শক। প্রায় ৩০টিরই বেশি বই লিখেছেন বাংলায়। তাঁরই উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল `বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ’।

তাঁর নামানুসারে পরিসংখ্যানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যে কোনো কণাই আজ `বোসন কণা’ নামে পরিচিত।