Site icon জীবিকা দিশারী

উত্তরাখণ্ডে বিপর্যয়: দেখে নিন হিমবাহধস থেকে প্লাবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

Uttarakhand Glacier Disaster, Uttarakhand disaster Update

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০টা বেজে ৪৫ মিনিট। ফের একবার দুর্যোগের শিকার দেবভূমি। এবার হিমবাহ ধস (Glacier Disaster) এবং তার জেরে প্রবল জলোচ্ছ্বাস। উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) চামোলি জেলায় ঋষিগঙ্গা  ও ধৌলিগঙ্গা নদীর বানের তোড়ে ভেসে যায় এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল। তপোবন এলাকার ঋষিগঙ্গা ও ধৌলিগঙ্গা নদীর বাঁধ সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। তপোবনের কাছে এনটিপিসির একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিপুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রায় ১৫০ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন এই প্রকল্পে, যাঁরা এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ। ধৌলীগঙ্গার আশেপাশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল, গ্রাম জলোচ্ছ্বাসের কবলে, সোমবার দুপুর পর্যন্ত ১২ জন মৃত বলে জানানো হয়েছে। উদ্ধারকাজ করছে ইন্দো টিবেটান বর্ডার পুলিশ, ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স, স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স ও অন্যান্য উদ্ধারকারী দল। স্মৃতি উস্কে দিচ্ছে ২০১৩ সালের উত্তরাখণ্ডের ভয়াবহ বন্যা বিপর্যয়ের।

গ্লেসিয়ার লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড, ছোট করে বললে GLOF, গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর আরেক ভয়ঙ্কর প্রতিফলন। তবে শুধুমাত্র বিশ্ব উষ্ণায়ন ছাড়াও GLOF-এর আরও বেশ কিছু কারণ দেখিয়েছেন ভূ-বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে অন্যতম ভূমিক্ষয় (Erosion), ভূকম্পন (Earthquake), বরফপৃষ্ঠের তলদেশে অগ্ন্যুৎপাত (Volcanic Eruption), অতিরিক্ত জলোচ্ছ্বাসের চাপ। গ্লেসিয়ার লেক দু ধরনের হতে পারে। গ্লেসিয়ার দিয়ে পরিবৃত জলাধারকে বলা যেতে পারে প্রো-গ্লেসিয়াল লেক, গ্লেসিয়ার দ্বারা আবৃত জলাভূমিকে বলা হয় সাব-গ্লেসিয়ার লেক। এরকম এক ধরনের প্রো-গ্লেসিয়াল লেকের সমাপতনের ফলেই উত্তরাখণ্ডের এহেন দুর্ঘটনা বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। হিমবাহ ধস নিয়ে বিগত কয়েক বছর ধরেই ইউনাইটেড নেশনস কাজ করে চলেছে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ পর্বতমালার বিস্তৃত অঞ্চল, মধ্য এশিয়া, ইউরোপের আল্পস পর্বতমালার বিস্তীর্ণ এলাকাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।

GLOF-এর জন্য ক্ষতিগ্রস্ত কিছু দেশ বা অঞ্চল – 

১) এর জন্য সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় রয়েছে আইসল্যান্ড। আইসল্যান্ডের ভাষায় এই ধরনের হিমবাহ ধসকে বলা হয় জোকুলহ্লাউপ (Jokulhlaup)। ১৯৯৬ সালে গ্রিমশ্টফন (Grimstvon) আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কারণে ব্যাপক গ্লেসিয়ার বার্স্ট বা হিমবাহ ধস হয়। বানের গতিবেগ ছিল প্রায় ৫০,০০০ কিউবিক মিটার প্রতি সেকেন্ড এবং বন্যায় ভেসে যাওয়া শৈলখণ্ডের ওজন ছিল প্রায় ৫০০০ টন।

২) মাঝেমধ্যেই হিমবাহ ধসের কবলে পড়ার তালিকায় রয়েছে আলসাকাও। নিক নদীর কাছে ১৯১৮ থেকে ১৯৬৬ পর্যন্ত বহুবার জর্জ লেক জলোচ্ছ্রাসের ঘটনা ঘটে। এছাড়াও এবিস (Abyss) লেক অঞ্চলে এধরনের ধস মাঝেমধ্যেই ঘটে থাকে।

৩) ১৯৪১ সালে ১৩ ডিসেম্বর পেরুতে এক ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় হিমবাহ ধস। করেদিলেরা ব্ল্যাংক পর্বতের হিমবাহ ধসের ফলে আন্দিজ পর্বতরেঞ্জের অনুগত প্লাককোচা লেকের বিপর্যয় ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে ফেলে দেয় পেরুকে। সে বছর প্রায় ১৮০০ মানুষের প্রাণহানি হয় এই বিপর্যয়ের ফলে। ভূ-বিজ্ঞানীদের মধ্যে এই GLOF নিয়ে গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাড়ানোর জন্য প্রভাবিত করেছিল এই ঘটনা।

৪) ২০০০ সালের আগস্ট মাসের তিব্বত মালভূমির এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। ১০ হাজার ঘর, ৯৮টি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয় এ হেন ধসের কারণে।

হিমবাহ হ্রদ বা গ্লেসিয়ার লেক সম্বন্ধে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য – 

 

 

রাইস ট্যালেন্ট স্কলারশিপ টেস্ট’-এ রেজিস্ট্রেশন করতে ক্লিক করুন

আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল ক্লিক করুন

 

Uttarakhand Glacier Disaster, Uttarakhand disaster Update

Exit mobile version