Site icon জীবিকা দিশারী

সংবাদ, সাংবাদিক ও নিরপেক্ষতা

world press freedom day

Courtesy: European Journalists Network


সাংবাদিকদের কাঁদতে নেই। যুদ্ধের, দুর্ভিক্ষের খবর করতে যাঁরা যান (world press freedom day),  তাঁদের তো আরও ।
যুদ্ধের শেষ সংবাদের জন্য তাঁকে শত শত মৃত্যু দেখেও শেষ ক্ষণ পর্যন্ত সংবাদ পরিবেশন করে যেতে হয়। নিজের জীবন বাজি রেখে।
আমি এক সম্পাদককে চিনে ছিলাম সেদিন, মা মারা গেছেন,  আগে সম্পাদকীয় শেষ করলেন তারপর দাহ ঘাটে গেলেন।
যাবার সময় কানে কানে বলে গেলেন, এ খবর আর কাউকে বোলো না। তখন সংবাদপত্র ডিজিটাইজড হয়নি।
এই তো সেদিন , মাস কয়েক হল,  এক সংবাদ পাঠিকা টিভিতে নিজেই নিজের স্বামীর সড়ক দুর্ঘটনার খবর পাঠ করলেন।
এমন উদাহরণ সংবাদপত্রের দুনিয়ায় অজস্র। কর্তব্য ও নিষ্ঠার এক কঠিন কঠোর সংকল্প নিয়েই সংবাদ বিশ্বে প্রবেশ করতে হয় একজন সাংবাদিককে।
তার সব থেকে জীবন্ত উদাহরণ করোনা সংবাদ সংগ্রহ। অনেককেই অফিসেই ঘরবাড়ি বানিয়ে ফেলতে হয়েছে।
ঘর থেকেও খবর লিখে পাঠাতে অনেকেই ব্যস্ত।
দুদিনে চার ব্যক্তিত্বের মৃত্যু সংবাদ লেখার পর এক সাংবাদিক বন্ধু হেসে বললেন, আজ সারাদিন লাশকাটা ঘরে পড়েছিলাম।
প্রতিবছর ৩ মে ওয়ার্ল্ড প্রেস ডে, বা ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে পালন করা হয়। সংবাদপত্রে বাক স্বাধীনতা বা সংবাদপত্রের নিরপেক্ষতা নিয়ে বর্তমানে আলোচনার অন্ত নেই।
সংবাদপত্র বা সংবাদ এখন কতটা নিরপেক্ষ এ প্রশ্নটাই সব থেকে বড়। অনেকেই বলেন সংবাদ পত্র এখন সরকার বা রাজনৈতিক দলগুলির কাছে মাথা বিকিয়ে বা পায়ে শিকলবাঁধা!
তা সে প্রিন্ট মিডিয়া হোক, বা টিভি সাংবাদিকতা হোক।
এই বিতর্কিত বিষয়ের অন্ত নেই। মত ও দলের সঙ্গে সঙ্গেই চলে সংবাদের ভাষ্য। সংবাদ পত্র তার স্বাধীন দৃষ্টিভঙ্গি ও নিরপেক্ষ সাহসিকতার পরিচয় কতটা দেয় এ নিয়ে কৌতূহলের অন্ত নেই (world press freedom day)।
এক কঠিন সময়ের মুখে মুদ্রিত বিশ্ব। হু হু করে কমছে কাগজ পড়ার অভ্যাস। সংবাদপত্র তার পাঠক হারাচ্ছে, অর্থনৈতিক বিপন্নতার সম্মুখীন ছোট বড় সব সংবাদপত্রই।
ফলে যত্রতত্র কর্মহীন বা ছাঁটাই বা কাট অফ হচ্ছেন ওই সেই সাংবাদিক সংবাদকর্মীরা।
যাঁরা জীবনকে বাজি রেখে, সংবাদ সংগ্রহে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
নানা সময়ে কত সহকর্মী, কত চেনাজানা সাংবাদিক বন্ধু কাজ হারা হয়েছেন।
কেউ কেউ চরম কষ্টেও সাংবাদিকতাকে আঁকড়ে থেকেছেন অন্য কোনো উপায় নেই। আজকের দিনে তাঁদের কুর্নিশ জানাই।
গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। সাংবাদিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে।
এই করোনা পরিস্থিতিতে কী দাঁড়াবে কে জানে। আরও কত কর্মহীন হবেন!  অন্যদিকে রোজ একটা দুটো করে ওয়েব পোর্টালের জন্ম হচ্ছে।
অন্য পেশার সঙ্গে এই পেশার একটা বিশেষ বিষয় লক্ষ্য করা যায, একবার এ পেশায় প্রবেশ করলে আর কোনোদিনই পেশা ছেড়ে বেরনো কঠিন।
পেশা পরিবর্তন করার দৃষ্টান্ত কমই দেখা যায়।  অতএব সেখানেও নিজের সঙ্গে নিজের লড়াই।
গত কয়েক মাসে অন্তত এক ডজন ছোট কাগজ বন্ধ হয়ে গেছে। করোনা পরবর্তী কোথায় দাঁড়ায় সেটাই দেখার।
সংবাদপত্র বা প্রেস সংবিধানে চতুর্থ পিলার হিসেবে বর্ণিত
কোথায় কী চাকরির আবেদন চলছে দেখতে ক্লিক করুন
Exit mobile version