বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস

1869
0
Thalassaemia-Day Picture

প্রতি বছর ৮ মে দিনটি বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস হিসেবে পালিত হয়। চিকিৎসকদের মতে থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তজাত রোগ (world thalassemia day)।

যে কোনো বয়সেই থ্যালাসেমিয়া ধরা পড়তে পারে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা ধরা পড়ে শিশুদের মধ্যে। কারণ বাবা বা মা-র কারও থ্যালাসেমিয়াজনিত সমস্যা থাকলে তার থেকে সন্তানদের মধ্যে সেই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি।

তাই বর্তমানে বহু দেশে বিবাহের পূর্বে পাত্র-পাত্রীর রক্ত পরীক্ষা করার নিয়ম চালু হয়েছে। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগী সাধারণত রক্তে হিমোগ্লোবিনের অভাব কারণে অক্সিজেনের স্বল্পতা বা অ্যানিমিয়াতে ভুগে থাকে।

এই রোগটি হলে  রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ খুবই কমে যায়, মাথার হাড় বড় হতে দেখা যায়, লিভার অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে, হাঁটু ও পায়ের শক্তি কমে যায়, হার্টের ও ফুসফু্সের নানান জটিলতা ছাড়াও জণ্ডিস এর মতো ব্যাধিও আক্রমণ করে।

এটি সাধারণত জিন ঘটিত রোগ। তাই সারাবিশ্বে প্রতি বছর লক্ষাধিক শিশু থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে জন্মায়। এর একমাত্র কারণ সাধারণ মানুষদের মধ্যে অসচেতনতা।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে এই মুহূর্তে বিশ্বে থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক প্রায় ২৫০ মিলিয়ন। সউদি আরবে মোট জনসংখ্যার ১৯ শতাংশ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। ভারতে প্রতি বছর ৭ থেকে ১০ হাজার শিশু জন্মায় থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হয়ে।

উল্লেখ্য ডাক্তারি পরিভাষায় থ্যালাসেমিয়া আলফা, বিটা, ডেলটা প্রভৃতি বিভিন্ন স্তরে পরিচিত। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের অধিকাংশেরই আয়ু হয় মাত্র কয়েক বছর। রক্তাল্পতাজনিত কারণে শারীরিক নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয় ও দ্রুত মৃত্যু ডেকে আনে।

তাই সারা বিশ্বে সাধারণ মানুষদের মধ্যেই সচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর ৮ মে থ্যালাসেমিয়া দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। সরকারি ও বেসরকারি নানা সংগঠনের উদ্যোগে থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা নিয়ে প্রচার চালানো হয়।

১৯৯৬ সালে গঠিত হয় থ্যালাসেমিয়া ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন নামে একটি বেসরকারি সংগঠন। যেখানে বিশ্বের ৫৫টি দেশের ১০৮ জন সদস্য কাজ করে চলেছেন। এ ছাড়াও আরও বহু সংগঠন রয়েছে।

একমাত্র সচেতনতাই পারে এই ভয়ঙ্কর রোগটির হাত থেকে নবজাতক শিশুদের অকালে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে। তাই বিবাহের পূর্বে সকলেরই এই পরীক্ষাটি করে নেওয়ার ব্যাপারে সচেতন হয়ে ওঠা উচিত।

এ বছর থ্যালাসেমিয়া দিবসের থিম `থ্যালাসেমিয়া পাস্ট, প্রেজেন্ট অ্যান্ড ফিউচার—ডকুমেন্টিং প্রগ্রেস অ্যান্ড পেশেন্টসনিডস ওয়ার্ল্ডওয়াইড’ (world thalassemia day)।