কাইফি আজমি

1829
0

এক বর্ণাঢ্য ধনী পরিবারে জন্ম কাইফি আজমির, ১৯১৯ সালের ১৪ জানুয়রি। প্রকৃত নাম আথার হুসেন রিজভি। এই রিজভি কী করে কাইফি আজমি হয়ে গেলেন তা বিস্তৃত ইতিহাস। ধনী পরিবারের কিশোর চোখের সামনে দেখেছেন স্বাধীনতা সংগ্রামের লড়াই। ৪২-এর ভারত ছাড়ো আন্দোলন। শিশুবয়স থেকেই গজল লেখায় সিদ্ধহস্ত। সেই পুঁজি নিয়েই মুম্বই চলচ্চিত্রজগতে প্রবেশ। একদিকে সংগীত-সাহিত্য রচনা, অন্যদিকে বামপন্থী আন্দোলনে সামিল হয়ে পড়া। প্রথম জীবনে উর্দু সাংবাদিকতা করে উপার্জন করলেও পরবর্তী জীবনে সংগীত জগতেই পেশাগত আত্মনিয়োগ। তাঁর রচিত বহু সংগীত সারা দেশে আলোড়ন তুলেছিল। প্রথম কবিতার বই ‘ঝংকার’। পড়াশোনা ও গজল সৃষ্টির কারণে বিভিন্নক্ষেত্রে নানান পুরস্কার পেয়েছেন। একদিকে সংগীত, অন্যদিকে বামপন্থী রাজনীতি ও নারীর অধিকার রক্ষায় আন্দোলনে নেতৃত্ব দান।

উত্তরপ্রদেশের আজমগড় জেলার মুসলিম শিয়া সম্প্রদায়ে জন্মগ্রহণ করলেও উদার মানসিকতাই ছিল তাঁর জীবনের মূল কথা। কমিউনিজমে বিশ্বাসী এই কবি এক সময় আইপিটিএ-র সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। দরিদ্র নারীদের শিক্ষার জন্য একটি এনজিও গঠন করেন। কাইফি আজমি হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল ফর গার্লস নামে একটি স্কুলও তৈরি করেন। নারীদের কম্পিউটার শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে প্রশিক্ষণ স্কুলও তৈরি করেন।

তাঁর `আউরত’ কবিতা সারা দেশে সুনাম অর্জন করার পাশাপাশি ‘গরম হাওয়া’, ‘অর্থ’ ইত্যাদি অসংখ্য ছবির গান লিখেও প্রভূত সম্মান অর্জন করেছিলেন। তিনটি বড় পুরস্কার পেয়েছেন। লিটারেচার অ্যান্ড এডুকেশনের জন্য পেয়েছিলেন পদ্মশ্রী সম্মান। বিশ্বভারতী এই কবি এবং সমাজকর্মীকে ডক্টরেট উপাধিতে ভূষিত করেছিল। চলচ্চিত্র দুনিয়ার অনেক নামী-দামি পুরস্কার তিনি পেয়েছেন।

সমাজকর্মী, কবি, গীতিকার কাইফি আজমি ২০০২ সালের ১০ মে প্রয়াত হন। প্রতিভাসম্পন্ন এই মানুষটিকেই তাঁর ১০১তম বর্ষে গুগুল ডুডুল–এ সম্মান জানাল।

নাটকের জগতের অভিনেত্রী সওকত আজমি তাঁর স্ত্রী। অভিনেত্রী শাবানা আজমি তাঁর কন্যা। পুত্র বাবা আজমি একজন সিনেমাটোগ্রাফার। টিভি অভিনেত্রী তনভি আজমি তাঁর নাতনি।