কিছু অন্য ধরণের সরকারি কাজের খোঁজ

1610
1
West Bengal Govt Job

সরকারি চাকরি মানেই ১০টা-৫টার ডিউটি, বান্ডিল করা ফাইল ঘাঁটা, বছরে অনেক ছুটি — অধিকাংশ প্রার্থীর মনে এরকমই একটা ধারণা থেকে থাকে। কিন্তু এর থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত একটি দিকও রয়েছে। একটু অন্য ধরনের আকর্ষণীয় বা গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়েও অনেক সরকারি কাজ রয়েছে। যেগুলিতে যোগ দেওয়ার জন্য এখন থেকেই ভাবনা শুরু করে দিতে পারেন, এমনকি  ছাত্রাবস্থা থেকেই।

এরকমই কিছু ব্যতিক্রমী সরকারি কাজ:

) অনেকেই আছেন যাঁদের ছোটবেলা থেকেই ফটোগ্রাফি খুব পছন্দের। মনে-মনে ভাবছেন, ফটোগ্রাফির সঙ্গে আবার সরকারি চাকরির সম্পর্ক কী? একবার ভেবে দেখুন, এতো সরকারি প্রকল্প, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক, সরকারি এত ওয়েবসাইট— সব জায়গাতেই কত ছবির প্রয়োজন হয়, আবার আরেকদিকে, অপরাধমূলক কাজের জায়গায়তেও ফটোগ্রাফারের দরকার পরে। তাই নিজের ফটোগ্রাফির শখ থাকলে সেটাকে সরকারি চাকরিতেও পরিণত করা যেতেই পারে। “Photo Division of India” হল কেন্দ্রীয় সরকারের ছবি সংক্রান্ত ডিভিশন। ওয়েবসাইট: http://photodivision.gov.in/। সেখানে আপনি নিজের ছবি পাঠাতে পারেন। আপনার কাজ ও সামর্থ্য দেখে আপনাকে সরকারি প্রজেক্টের জন্য বেছে নেওয়া হতে পারে। অন্যদিকে, পুলিশের ফরেনসিক ডিভিশন অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ডিভিশন থাকে, সেখানেও নিয়োগ হয়ে থাকে।

) প্রায় সকলেই আমরা ফেলুদা-ব্যোমকেশের ভক্ত। কিন্তু বর্তমানে সরকারি ডিটেকটিভ বা বলা যেতে  পারে পুলিশ ইনভেস্টিগেটিভ অফিসারদের সাহায্য করার জন্য পিছনে একটি এক্সপার্ট টিম কাজ করে, সেটা হল ফরেনসিক টিম। ফিঙ্গার প্রিন্ট স্টাডি, হ্যান্ড রাইটিং অ্যানালিসিস, ফরেনসিক সাইকোলজি এরকম বিবিধ বিভাগ রয়েছে। এই দপ্তরগুলিতে কাজ কিন্তু খুবই রোমাঞ্চকর। মূলত বিজ্ঞান শাখার ছাত্র-ছাত্রীদের এই বিভাগগুলিতে নিয়োগ হয়। অনেক ভালো সংস্থাও রয়েছে যারা এই বিষয়গুলি উপযুক্ত ট্রেনিং দেয়। http://www.ifs.edu.in/ ওয়েবসাইটটি দেখতে পারেন।

) অনেকের আবার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখতে, সেখানকার ভৌগোলিক পরিমণ্ডল, ঐতিহাসিক মূল্য সম্পর্কে জানতে ভালো লাগে, স্থাপত্য-ভাস্কর্যের প্রতি একটা আলাদা টান আছে, তাহলে এর জন্য রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের আর্কিওলজিকাল অর্থাৎ প্রত্নতত্ত্ব বা পুরাতত্ত্ব দপ্তর। স্বাভাবিকভাবেই, উচ্চমাধ্যমিকের পর আর্কিওলজি নিয়ে পড়াশুনা শুরু করলে এক্ষেত্রে সুবিধা।  আর্কিওলজি নিয়ে মাস্টার্স করতে পারলে আর্কিওলজিকাল সোসাইটি অব ইন্ডিয়া তে কাজের সুযোগ তো রয়েছেই। একবার ঘেঁটে দেখতে পারেন http://asi.nic.in/ ওয়েবসাইটটি।

) বিভিন্ন গল্প, ফিল্মের দৌলতে আজকাল  র’ এজেন্ট-এর বিষয়টি খুব চর্চার মধ্যে চলে এসেছে। অনেকেরই জানতে ইচ্ছা করে, ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থার এজেন্ট হতে গেলে কী করা যেতে পারে। প্রথমেই বলে রাখা প্রয়োজন, এই ’রিসার্চ অ্যান্ড এনালিসিস উইং’-এর সদস্যরা অত্যন্ত প্রশিক্ষিত ও মেধাবী হয়ে থাকেন। এই সুযোগের জন্য বরং এখন থেকেই ইউপিএসসির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করা ভালো।  আইপিএস হিসাবে জয়েন করার পর পদোন্নতির মাধ্যমে এবং দক্ষতার উপর নির্ভর করে এই বিশেষ শাখার জন্য প্রার্থী বেছে নেওয়া হয়।

) আপনি যদি খুব বিজ্ঞানমনস্ক হন এবং সৌর জগৎ নিয়ে জানার আকাঙ্ক্ষাও তীব্র, আপনি যদি কর্মজীবনে বৈজ্ঞানিক গবেষণা নিয়ে থাকতে চান এবং স্পেস রিসার্চ নিয়ে দেশের উপকারের জন্য কিছু করতে চান, তাহলে তো জানেনই—আমাদের দেশের সেরা স্পেস রিসার্চ প্রতিষ্ঠান ইসরো। স্পেস রিসার্চ নিয়ে পড়াশুনা করতে আপনাকে ভর্তি হতে হবে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে। সেখান থেকে বিটেক বা এমটেক করে ইসরোতে কাজ করার সুযোগ পাওয়া যেতে পারে। আবার দেশের আইআইটি, এনআইটিগুলো থেকে মেধাবীদের ইসরো নিয়োগ করে থাকে।

তাই সরকারি চাকরি মানেই, দশটা-পাঁচটার চাকরি না ভেবে অবশ্যই নিজের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা এবং তার পাশাপাশি একটু রোমাঞ্চকর এবং অন্যধরনের আকর্ষণীয় এই কাজগুলোকে বেছে নেওয়া যেতে পারে, তৈরি হতে হবে সেইমতো।